
আবারো কালিগঞ্জের বন্ধন হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু: কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা
কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগরে অবস্থিত বেসরকারি বন্ধন হাসপাতালে চিকিৎসায় চরম অবহেলার কারণে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাসপাতালটির সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
সিভিল সার্জনের পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়, চিকিৎসক অনুপস্থিতি এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে নবজাতকের মৃত্যু ঘটেছে—এমন একটি অভিযোগের ভিত্তিতে গত(৪জুন) ২০২৫ তারিখে গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিনে হাসপাতালটি পরিদর্শন করে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রামনগর গ্রামের মোস্তাকিম বিল্লার স্ত্রী মনিরা পারভীন গত ২৪ মে বিকেল ৪টায় প্রসব ব্যথা নিয়ে বন্ধন হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে দীর্ঘ সময় সেখানে কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স উপস্থিত ছিলেন না।
প্রসূতির অবস্থার অবনতি সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘসময় প্রসব বিলম্ব ও বাধার কারণে নবজাতকের শ্বাসরোধজনিত মৃত্যু ঘটে। তদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়— “Asphyxia due to prolonged/obstructed labour.”
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়, হাসপাতালের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে। নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়।
এ নির্দেশনার অনুলিপি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, খুলনা বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য), সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে নবজাতকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসক ও লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। তারা দ্রুত এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ অভিযান পরিচালনা এবং কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।