মঙ্গলবার - ২৪শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১০ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৮শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

তেঁতুলিয়ায় ভজনপুরে বিয়ের দাবীতে অনশনের শিক্ষার্থী  নিখোঁজ  ১৪ দিনেও উদ্ধার হয়নি 

তেঁতুলিয়ায় ভজনপুরে বিয়ের দাবীতে অনশনের শিক্ষার্থী  নিখোঁজ  ১৪ দিনেও উদ্ধার হয়নি

 

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বিয়ের দাবিতে অনশনের ৫ দিন পর রহস্যজনকভাবে  নিখোঁজ  রয়েছে  এক শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায়  ভজনপুর বগুলা হাগি বাসিন্দা ছাত্রীর বাবা মো: আতিয়ার রহমান গত রবিবার (২২ জুন) তেঁতুলিয়া মডেল থানায় ও পঞ্চগড় পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নিখোঁজের ১৪ দিনের পরেও সন্ধান মেলেনি ওই ছাত্রীর। ওই ছাত্রী ভজনপুর গিতালগছ উচ্চ বিদ্যালয়ের এস এসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

রবিবার (২২ জুন) বিকালে ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে ৪ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ৫ /৬ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়. গত রবিবার (৮ জুন) রাত উপজেলা ভজনপুর ইউনিয়নের বগুলাহাগি গ্রামের মৃত শামসুল আলমের ছেলে মো: জাকির হোসেনের বাড়ীতে বিয়ের দাবীতে অনশনে বসেন কিশোরী । ওই দিন রাতেই ৩ টার সময়ে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান মিলে বিষয়টি আপোষ রফাদফার চেষ্টা করেন। ওই শিক্ষক প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করেন। অন্যদিকে প্রমাণসহ বৈঠকে দাখিল করেন ওই ছাত্রী। বিষয়টি সমাধান না হওয়ার কারণে লাগাতার ৫ দিন বিয়ের দাবীতে অনশনে থাকেন ওই ছাত্রী। গত-শুক্রবার (১৩ জুন) গভীর রাতে ওই ছাত্রী রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান প্রেমিক।

প্রাইভেট শিক্ষক জাকির হোসনের বাড়ী থেকে। কথায় কিভাবে আছেন, নাকি হত্যা করা হয়েছে এই নিয়ে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন ওই ছাত্রীর পিতা। গুমের ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও তার কোন সন্ধান মিলেনি ওই শিক্ষার্থীর।

ছাত্রীর পিতা মো: আতিয়ার রহমান জানান, আমার মেয়েকে দীর্ঘ দিন থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রেমের প্রস্তাব ও বিভিন্ন লোভ লালসা দেখাইয়া আসক্ত করেন। আমার মেয়ে জাকির হোসেনের বাড়ীতে বিয়ের দাবীতে অনশনে বসেন। ভেবেছিলাম বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মিমাংসা করবেন। হঠাৎ গভীর রাতে গুম হয়ে যায়। আমি বহু জায়গায় খোঁজাখুজি করেছি কিন্ত সন্ধান পায়নি। তাই নিরুপায় হইয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। যদি আমার মেয়েকে বৈধপন্থায় বিয়ে করে থাকে এবং বৈধ কাগজপত্র দেখালে আমার আমার কোন দাবীদাবা থাকিবে না। কিন্তু আমার মেয়ের সকল কাগজপত্র আমার বাড়ীতে আছে। আমার মনে হয় হত্যার উদ্দেশ্যে কোন গোপন জায়গায় রাখেছেন। তাই আমি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের জোর দাবী জানাচ্ছি।

জানা যায়,  ওই শিক্ষক উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের শালবাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক। ওই ছাত্রীর সাথে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

উপজেলার ৬ নং ভজনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ছেলে পক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করতেছেন। মেয়েটি অনশনে থাকা অবস্থায় উধাও হয়ে যায় , এখন কথায় কিভাবে রয়েছেন আমার অজানা। অনেকে বলতেছে বিয়ে করেছে, কিন্তু বিয়ে করেছে নাকি গুম করে রাখা হয়েছে এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, আমরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে ও প্রাইভেটে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকি কিন্তু শিক্ষকদের এ ধরনের কার্যকলাপে আমরা উদ্বিগ্ন। ওই শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয় ও এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।

এই বিষয়ে শিক্ষক জাকির হোসেনের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কোন প্রকান ফোন রিসিভ করেনি।

স্থানীয়রা বলেন, কিছু অসৎ লোকের পরামর্শে অসৎ উদ্দেশ্যে ওই অসহায় মেয়েটিকে গুম করে রাখা হয়েছে। মেয়ের বাবা অত্যান্ত গরিব হওয়ার কারণে পার্শ্বে দাড়াচ্ছে না কেউ।

এব্যাপারে সোমবার( ২৩: জুন) বিকালে তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবু মুসা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn