সোমবার - ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ভালুকায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ

ভালুকায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ

 

ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতা, ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই স্কুলের সভাপতি সবজুল ইসলাম বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা, উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের রাংচাপরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরফান আলী ১৯৯৫ সালে (স্কুলটির প্রতিষ্ঠাকালিন সময়) হাসমত আলী বেপারির জমি বিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তর করার কথা বলে নিজ নামে সাব কাবলা করে নেয়। এছাড়াও আছিয়া খাতুনের পৈত্রিক সম্পত্তি তাকে দাতা সদস্য না করেই স্বেচ্ছাচারিতা করে দখল করে নেয়। অভিযোগ রয়েছে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অবৈধ ভাবে অদ্যাবদি পর্যন্ত তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালনের সময় পছন্দের লোক দিয়ে ম্যানিজিং কমিটি গঠন, শিক্ষক নিয়োগ ও অফিস সহকারী নিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়োগ বানিজ্য ও স্কুলটি এমপিও ভুক্ত করার জন্য আবারও শিক্ষকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

এছাড়াও জেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা স্কুলের কোন উন্নয়ন না করেই আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ১৯৯৯ সালে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নেন এই শিক্ষক। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত টি আর/ কাবিখা ও থুক বরাদ্ধ থেকে প্রাপ্ত সকল অর্থই তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও স্কুলটিকে এমপিও ভুক্ত করার কথা বলে প্রথমে সকল শিক্ষকদের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা করে নেন। পরে আবার একই কারনে তাদের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নেন অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষক। কিন্তু স্কুলটি অদ্যাবদি তার অবহেলার কারণে এমপিও ভুক্ত হয়নি। সাবেক সহকারী শিক্ষক ফাহমিদা সুলতানা, স্বপন কুমার দাস, মো. খায়রুল ইসলাম, সাবেক অফিস সহকারি মো. সুমন মিয়ার কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেন এবং তাদের কে টাকা ফেরত দেওয়া ছাড়াই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন।

পরবর্তীতে অফিস সহকারি মো. বাপ্পি মিয়াকে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়ে তাকে দিয়ে বিভিন্ন সময় অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছে। ৭৭ বছর বয়স হলেও থামেনি তার দূর্ণীতি। সরকারী ত্রানের ৫ বান্ডেল টিন ওঠিয়ে সেই টিন বিক্রি করে কমদামি টিন কিনে স্কুলে লাগান তিনি। অপরদিকে বয়সের কারনে দায়িত্ব হস্তান্তর করার অযুহাত দেখিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকলেও স্কুলের শিক্ষার্থীদের নামে বই উঠিয়ে বিভিন্ন স্কুলে বই বিতরনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়টি বন্ধ করে বাহিরের শিক্ষার্থীর দ্বারা প্রতারণার মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন/ফরম ফিলাপ করে বহু টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের।

বর্তমান সভাপতি সবজুল ইসলাম জনান, তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দূর্ণীতি বন্ধ করা সহ নতুন বছরে বিদ্যালয়টিতে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তির উদ্যোগ নেন। এতেই ক্ষেপে যান প্রধান শিক্ষক। সবজুল ইসলামকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া সহ প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান স্কুলটির সভাপতি।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আরফান আলীর জানান, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি এসব কোন কাজের সাথে জড়িত নয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহম্মেদ জানান, তিনি ছুটিতে আছেন, অফিসে এসে খোঁজ নিয়ে তদন্তমাফিক ব্যবাস্থা নিবেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn