শুক্রবার - ২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২রা মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

রথ মেলায় যুবদল সদস্য সুইটের চাঁদাবাজি অভিযোগ: রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সক্রিয় সিন্ডিকেট!

রথ মেলায় যুবদল সদস্য সুইটের চাঁদাবাজি অভিযোগ: রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সক্রিয় সিন্ডিকেট!

 

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রথ মেলাকে কেন্দ্র করে এবারও উঠে এসেছে চাঁদাবাজির অভিযোগ। আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন তানভীর আহমেদ সুইট নামের এক যুবদল সদস্য। যদিও তিনি এখনও রাজশাহী মহানগর যুবদলের কোনো পদে নেই, তবুও অভিযোগ রয়েছে—তিনি একটি সক্রিয় চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

২১ নম্বর ওয়ার্ডের এক যুবদল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সুইট আমায় টেনে ওই সিন্ডিকেটে যুক্ত করতে চেয়েছিল। সে বলেছিল—‘২২ নম্বর ওয়ার্ডের সবাই খাচ্ছে, ২১ নাম্বারের তোমরা কেন বাকি থাকবা? চল, আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাগরপাড়া থেকে স্বচ্ছ টাওয়ার মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫-৬টি চাঁদা উত্তোলন পয়েন্ট চালু রয়েছে। এসব স্থানে টোকাই, মাদকাসক্ত ও বখাটে যুবকদের দিয়ে চাঁদা আদায় করানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই কর্মকাণ্ডের পেছনে ছত্রছায়া দিচ্ছেন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী।

সুইটের নাম চাঁদাবাজির সাথে জড়ানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে, তিনি নিজের নাম আড়াল করতে নানা কৌশল গ্রহণ করেন। অভিযোগ রয়েছে, সুবিধাবাদী কয়েকজন সাংবাদিকের মাধ্যমে প্রমাণ ছাড়াই আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করান। এই তথাকথিত সংবাদের কোথাও নেই কোনো কল রেকর্ড, প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য কিংবা ভিডিও—সবই একতরফা প্রচারণা।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর সুইট যুবদলের নাম ব্যবহার করে বোয়ালিয়া থানার কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে। এক যুবদল কর্মীর ভাষ্যমতে, “আমাদের এলাকার এক ছোট ছেলে থেকে ঘুষ নিয়েছিল সুইট ও বোয়ালিয়া থানার এক কর্মকর্তা। আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী কয়েকজন যুবদল কর্মী বিষয়টি জানার পর সুইটকে ডেকে সতর্ক করি। সে তখন মিথ্যা ও বাঁকা কথা বলতে শুরু করে। তখন আমরা তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে সাবধান করে দেই—যেন ভবিষ্যতে এমন কাজ আর না করে।”

সুইটের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে—তিনি আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর বাসায় ‘ঘেরাও অভিযান’ চালানোর নামে নাটক সাজান। ওইসব অভিযানে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ।

এই চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের কারণে রথ মেলায় ব্যবসা করতে এসে অনেক দোকানদারই চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন,“চাঁদা না দিলে দোকান তুলতে দেবে না বলে হুমকি দেয়।

 

রথ মেলার মতো ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবকে ঘিরে এভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা চাঁদাবাজ চক্র শুধু আইনশৃঙ্খলার জন্য নয়—সামাজিক মূল্যবোধের জন্যও হুমকি। প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত, এ ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া এবং প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করা।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত সুইট মুঠোফোনে বলেন, কোন একটা চক্র আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে তারাই এমন প্রচার করছে আমার নামে।

এই বিষয়ে জানতে রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি জানান, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে রতে প্রবেশ করব চাঁদাবাজের বিপক্ষে শক্ত পক্ষ একটা ব্যবস্থা নেব। যারা যুবদলের নাম ব্যবহার করে এমন অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়েছে তথ্য প্রমাণ পেলেই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn