
ভূমিদস্যুরা গিলে খাচ্ছে তিনটি রাবার বাগানের জায়গা- বাগানের ঘেঁষে ১১টি ইটভাটা
বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন এর অধীনে রাউজানে তিনটি রাবার বাগান রয়েছে।হলদিয়া, ডাবুয়া ও রাউজান রাবার বাগান।এ তিনটি রাবার বাগানের প্রায় ৪,২৪৫ একর জায়গা জবরদখল করে গড়ে তোলেছে বাড়িঘর,মৎস্য প্রকল্প,ও ইটভাটা। সরজমিনে দেখা গেছে, হলদিয়া রাবার বাগানের ফাঁকে ফাঁকে বাগানের জায়গা দখল করে মৎস্য প্রকল্প ও বাড়িঘর গড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এবিষয়ে হলদিয়া রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক সুজিত রায় ভৌমিক বলেন,বন বিভাগ থেকে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন ২হাজার ৮৫৭ একর ৮৫ শতক আয়তনের মধ্যে ২ হাজার ২৪৬ একর আয়তন টিলা ভূমিতে হলদিয়া রাবার বাগান গড়ে তুলেন। এরমধ্যে হলদিয়া রাবার বাগানের ৫ শত ৭৫ একর টিলা ভূমি জবর দখল করে ঘর-বাড়ি, বৃক্ষের বাগান, মৎস্য প্রকল্প করেছে প্রভাবশালীরা।৫ শত ৭৫ একর জবর দখল করা জমি থেকে অল্প পরিমাণ জমি উদ্ধার করা হলেও অধিকাংশ জমি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলেই রয়েছে। ডাবুয়া রাবার বাগান পরিদর্শনে দেখে গেছে, ডাবুয়া রাবার বাগানের ভিতর ১১টি অবৈধ ইট ভাটা। এসব ইটভাটা বাগানের ভিতরে ভাটার ইট পরিবহনে সৃষ্টি করা হয়েছে অসংখ্য রাস্তা।ইট তৈরীর মাটির জন্য কাটা হয়েছে কৃষি জমির মাটি ও বাগানের সাথে থাকা টিলা ভূমি।এস্কেলেটর দিয়ে মাটি কেটে নেয়ায় গভীর কুপে পরিণত হয়ে আছে এখানকার টিলা ভূমি। এই বাগানের ৩১ একর ৬২ শতক টিলা ভূমি জরবদখলে রয়েছে বলেও জানা গেছে। কোন কোন ব্যক্তি জবরদখলের জায়গা ভুমিহীনদের কাছে খন্ড খন্ড ভাবে বিক্রিও করেছে। স্থানীয় লোকজনের সাথে এই নিয়ে কথা হলে তারা বলেন, বাগানের ভিতর এত গুলো ইটভাটা একদিনে প্রতিষ্ঠা পায়নি। সেখানে প্রায় এক দশক ধরে চলছে ইট পোড়ানোর মহোৎসব। বাগানের গাছ কেটে ইট পরিবহনের রাস্তা করেছে ভাটার মালিকরা। এ ব্যাপারে ডাবুয়া রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন,তার বাগানের আয়তন ২ হাজার ৪শত ১৭একর ৮শতক। বাগান গড়ে ২হাজার ১শত ২০ একর ভূমিতে।এরমধ্যে ৩১একর ৬২শতক ডাবুয়া রাবার বাগানের জায়গা জবরদখল করে বৃক্ষের বাগান ও ঘরবাড়ী নির্মান করে বসতি গড়ে তোলা হয়েছে।বাগানের জায়গা উদ্ধার করতে জবর দখলকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলাটি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বাগানের ভিতর ইটভাটা ও রাস্তা সৃষ্টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার বক্তব্য যারা এসব কাজ করছে তারা প্রভাবশালী, একারণে কিছু করা যাচ্ছে না। রাউজান রাবার বাগান ঘুরে দেখা যায়,এই বাগানের ভিতরে গড়ে উঠে অবৈধ ইটভাটা। গিলে খাচ্ছে রাবার বাগানের জায়গা। বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রহুল আমিন জানান,রাউজান-কাউখালী পাহাড়ি এলাকা নিয়ে ১হাজার ৮শত ৬৭ একর আয়তনের মধ্যে ১ হাজার ৩শত ৭৮ একর ভূমিতে বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। ৫শত ৮একর টিলা ভূমি জবরদখলে রয়েছে। তবে ২একরের মত জায়গা উদ্ধার করে ৫০ একরে নতুন করে বাগান সৃজন করেছি।যারা রাবার বাগানের সরকারী ভূমি দখল করে সরকারী কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছেন তারা মূলত জননেত্রী শেখ হাসিনার সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছেন বলে জানান তিনি।