রবিবার - ১লা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ৫ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ঠাকুরগাঁওয়ে টাকা ছাড়া দুর্গোৎসবে ডিউটি মেলে না আনসার সদস্যদের !

ঠাকুরগাঁওয়ে টাকা ছাড়া দুর্গোৎসবে ডিউটি মেলে না আনসার সদস্যদের !

পূজোর আনন্দে বর্ণিল সাজে সেজেছে ঠাকুরগাঁও জেলার মণ্ডপগুলো। মণ্ডপ থেকে ভেসে আসা ধুপের গন্ধ জানান দিচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। মণ্ডপে-মণ্ডপে ভক্ত দর্শনার্থীদের ঢল। এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে গিয়ে দেবী দর্শনে সময় কাটছে তাদের। পূজা মণ্ডপে বিশৃঙ্খলা এড়াতে শুরু থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার আনসার সদস্যরা। তবে এ দায়িত্ব পেতে সকল আনসার সদস্যের কাছ থেকে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের পূজা মণ্ডপগুলোতে গত চারদিন থেকে দায়িত্ব পালন করছেন আনসার সদস্যরা। দায়িত্ব পালন শেষে ৮ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে তাদের প্রতিজনের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা। স্থানীয় প্রতিনিধি নেপালের মাধ্যমে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পিসি নুরবাহার। শুধু ধর্মীয় উৎসবে নয় নির্বাচন সহ যে কোন কর্মসূচিতে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করাতে দিতে হয় ঘুষ। ঘুষ না দিলে মেলেনা দায়িত্ব। তবে নিজের যাতায়াত খরচের জন্য এই টাকা নিয়েছেন বলে দাবি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ টি উপজেলার ৪৭২টি পূজা মণ্ডপের নিমিত্তে ৩১৬৮ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যাদের প্রায় অনেককেই এ দায়িত্ব পেতে দিতে হয়েছে ঘুষ।
ঘুষ আদায়ের জন্য উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের দল নেতা-নেত্রীদের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রতিনিধি। এসব প্রতিনিধির মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ জমা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দল নেতা-নেত্রীদের হাতে। পরে উপজেলা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ বাটোয়ারা হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আনসার সদস্য বাপ্পি ইসলাম বলেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে ৩ দিন কাজের জন্য ৮ হাজার করে টাকা পাব। সেজন্য আমরা ১ হাজার করে টাকা দিয়েছি। নির্বাচন সহ সব কাজে দায়িত্ব পালন করতে হলে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ ছাড়া আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয়না। আরেক আনসার সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, আমরা নেপাল এর মারফত আনসারের কাজ নিয়েছি৷ সে বলেছে ৩ দিন কাজ করলে ৮ হাজার টাকা করে পাব। সেজন্য আমরা নেপালকে ২৬ জন মিলে ১ হাজার টাকা করে দেই। কিন্তু পরে আমরা ঠাকুরগাঁও অফিস থেকে জানতে পারি আমাদেরকে ৮ দিন কাজ করতে হবে এবং দিন প্রতি ৪৭৫ টাকা করে ভাতা দেয়া হবে। পরে জানতে চাইলে নেপাল বলে এই টাকা নিয়ে উনি নুরবাহারকে দিয়েছে। আমাদেরকে প্রতারিত করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে পিসি নুরবাহার বলেন, আমি নেপালকে খরচের জন্য টাকা নিতে বলছি। নেপাল কত করে নিয়েছে তা জানিনা। আমি ৩শ-৪শত করে টাকা পেয়েছি। ওদের নিয়োগের জন্য অফিস যাওয়া খরচ, চা নাস্তা খরচ বাবদ এই সব টাকা খরচ হয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, দায়িত্ব পালনের জন্য কোন আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn