সোমবার - ৯ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ১৩ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোসেনপুরে ধান ক্ষেতের সবুজ ঢেউয়ে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

হোসেনপুরে ধান ক্ষেতের সবুজ ঢেউয়ে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

 

‘ধানক্ষেত’ কবিতায় ধানক্ষেতের বর্ণনা দিতে গিয়ে পল্লীকবি জসিম উদ্দিন দরদী মনে লিখেছেন- “পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সংকেত, সবুজে হলুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত।”

এ পঙক্তিগুলির বাস্তবতা এখন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে। ঢেউয়ের মতোই খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও শীষ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধু ঘন সবুজের সমারোহ। আর এই সবুজ ধান গাছের ঢেউয়ে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। হেমন্তের বাতাসে রোপা আমন ধানের সবুজ ঢেউ উপজেলার কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হবে। আর এমন সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে দুলে উঠছে প্রকৃতি। রোপা আমন ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। ধানের কাঁচা শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠে কৃষকের। যেন হারিয়ে যায় সবুজ মাঠে।দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বিকশিত করে তুলেছে। আর মাত্র ক’দিন পরেই সবুজ ধানগাছ ও শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে ফসলের মাঠ। মাঠ ভরা ফসলের স্বপ্ন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ছোঁয়া।রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষাণীর শূন্য গোলা। ফলে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের নতুন স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকেরা।

একদিকে যেমন সবুজের রাজত্বে কৃষকের আনন্দ অন্যদিকে বহু কৃষকের হৃদয় ফাটা আর্তনাদ কারণ এ বছর কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে অসংখ্য কৃষকের ধানের ক্ষেত পঁচে শেষ।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ধানের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে,কিছু মাঠে সবুজের সমারোহ আবার কিছু মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে ধান পচেঁ দিগন্ত বিস্তৃত শশ্মান।প্রাকৃতিক এ দূর্যোগের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ধানের প্রতিটি ক্ষেতে শীষ উঁকি দিচ্ছে। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকেরা। কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ একেএম সাহজাহান কবির বলেন,চলতি বছরে ৮ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এ বছর সরকারি অনুদানসহ অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ধানের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। কিন্তু ভারী বর্ষণে ১৬ হাজার কৃষকের ১ হাজার ৭শ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেলেও পরবর্তীতে ১৪শ হেক্টর জমির ধান একেবারেই পঁচে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn