
ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রায়পুরে মানববন্ধন
জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (সিলেট) চিকিৎসকসহ অন্যান্য সেবাদানকারীর উপর নারকীয় হামলা, সরকারি গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, এম্বুলেন্স, জরুরী বিভাগসহ অন্যান্য সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর ও বিনষ্টকরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তার ও কর্মচারিগন।
২২ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুর ১২ টায় রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য হাসপাতালের গেইটের সামনে পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বাহারুল আলম এর সভাপতিত্বে ঢাকা- মহাসড়কের পাশে এ মানববন্ধন করা হয়।
এই কর্মকর্তা বলেন, যারা হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডাঃ মামুনুর রশিদ পলাশ, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার রাশেদুন্নবী, ডাক্তার কবির, নাহিদা আক্তার মিতু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার ৪ নম্বর বাংলাবাজার ব্রিজের পাশে রাংপানি নামক স্থানে একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মসজিদের পুকুরে পড়ে ৪ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মারা যান।
নিহতরা হলেন- নিহাল পাল (২৬), জুবায়ের আহমদ সাব্বির (২৬), মেহেদী হাসান তামাল (২৫) ও সুমন আহমদ (২৫)। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দুজন করে ৪ জনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরতরা সবাইকে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় তাদের ইসিজিও করা হয়েছিল।
পরে স্থানীয়রা নিহতদের সিলেটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন, কিন্তু চালক না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে প্রথমে হাসপাতালের নিচতলা এবং পরে স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এছাড়া হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক হিল্লোল সাহা এবং স্টাফ আব্দুস সাত্তারকে মারধর করেন। এসময় হাসপাতালে থাকা একটি সরকারি জিপে আগুন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এদিকে নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই ওই চারজনকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসায় অসহযোগিতা করা হয়েছে। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি। এসময় উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে করা মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিহাল পালের বাবা বাদী থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
অপরদিকে, এই চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গত শনিবার ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- জেলা প্রশাসনের এডিএম ইমরুল হাসান, বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশ, সিভিল সার্জন ও ফায়ার সার্ভিসের একজন করে কর্মকর্তা।