রবিবার - ২২শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৬শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ডুমুরিয়ায় চুঁই ঝালের চাষ করে সাবলম্বী নবদ্বীপ মল্লিক

ডুমুরিয়ায় চুঁই ঝালের চাষ করে সাবলম্বী নবদ্বীপ মল্লিক

চুঁই ঝালের চাষ করে সাবলম্বী হয়েছেন শ্রী নবদ্বীপ মল্লিক। নবদ্বীপ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
গ্রাজুয়েশন করার পর তিনি বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে চাকরী নামক সোনার হরিন ছুতে ব্যর্থ হন। অনেকটা নিরুাপায় হয়ে শুরু করেন একটি মাৃল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানীতে কাজ। ভালই চলছিল তার ঐ ব্যবসা। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন মাল্টিলেভেল কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয আবারো বেকারত্বের জীবন। এ অবস্থায় স্থানীয় একজন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে গত ৫/৬ বছর আগে শুরু করেন চুই ঝালের চাষ। প্রথম এক দু’বছর একটু সমস্যা হলেও এখন আর কোন সমস্যা নেই। কারন এখন তিনি প্রতি মাসে ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকার চুঁই ঝালের চারা বিক্রি করেন। এছাড়া স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের বাজারে আরো দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকার চুই ঝাল বিক্রি করেন। নবদ্বীপ মল্লিক গত ২০২৩ সাল থেকে চুই ঝালের পাশাপাশি ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন।
খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে ডুমুরিয়া উপজেলার বারাতিয়া গ্রামে নবদ্বীপ মল্লিকের এন পি এন এগ্রো এন্টারপ্রাইজ নামে একটি নান্দনিক নার্শারী গড়ে তুলেছেন।
নবদ্বীপ জানান, অন লাইনে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরিয়ারের মাধ্যমে চুই ঝালের চারা এবং চুুই ঝাল সরবরাহ করে থাকেন। প্রতিটি চুঁই ঝালের চারা ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে এবং চুই ঝাল কেজি প্রতি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এছাড়া স্থানীয় বাজার গুলোতে তার চুই ঝালের চারা,কাটিং ও চুই ঝালের বেশ কদর রয়েছে। ড্রাগন এর পাশাপাশি তিনি আম,জাম,পেপে, আমড়াসহ বিভিন্ন প্রকারের ফুলের চারার চাষ করেন। এছাড়া তিনি আলু,পটল,বেগুন,টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের শাখ সব্জীর চাষ ও করেন।
তার এগ্রো ফার্মে নিয়মিত ২জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতন বাবদ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিতে হয়।
আমাদের ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি শেখ মাহতাব হোসেন কে নবদ্বীপ মল্লিক বলেন তিনি আমি অনার্স মাষ্টার্স পাশ করে বছরের পর বছর চাকুরী নামক সোনার হরিণের পিছনে নাঘুরে এ ধরনের কাজ করে বেকারত্বের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত রাখছি। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে তৈরী করেছি। অন্যের চাকরী না করে অন্যকে চাকরী দিতে হবে। আর এভাবেই এদেশকে সোনার বাংলায় রুপান্তরিত করা যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন যে, গাছটির কাণ্ড বা লতা মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়। খুলনা অঞ্চলে চুইঝালকে মসলা হিসেবে ব্যবহার করে চুইঝালের মাংস রান্না করা হয়। রান্নায় এর ঝাল খাবারের স্বাদ বাড়ায় আবার শরীরেরও কোনো ক্ষতি করে না। ঝোল জাতীয় মাছ-মাংস সব কিছুতেই স্বাদ তৈরি করে। এদের কাণ্ড, শিকড়, পাতা, ফুল, ফলের ঔষধি গুণ আছে। বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলের জেলা খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এবং নড়াইল এলাকায় এই চুইঝাল মসলা হিসেবে খুব জনপ্রিয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ডুমুরিয়া চুই সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn