পাঠ আবর্তের আয়োজনে চট্টগ্রাম : পীর বদর আউলিয়া (রহ.)’র অবদান শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় বক্তারা
পীর বদর আউলিয়া ছিলেন চট্টগ্রাম আবাদকারী
মহান সুফিসাধকদের অন্যতম একজন
চট্টগ্রামে ইসলাম প্রচারে আগত প্রথম সুফিসাধক হিসেবে পরিচিত পীর হযরত শাহ বদর (রহ.)’র স্মরণে পাঠ আবর্তের আয়োজনে গত ৩০ মে মঙ্গলবার বিকেলে ‘চট্টগ্রাম : পীর বদর আউলিয়া (রহ.)’র অবদান’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। পাঠ আবর্তের পরিচালক মুহাম্মদ হানিফ মান্নানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত-বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফি। অন্যান্য আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ইমাম আলা হযরত গবেষক স উ ম আব্দুস সামাদ, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, সাংবাদিক মুহাম্মদ আবু তালেব বেলাল, ইতিহাসবেত্তা সোহেল মুহাম্মদ ফখরুদ্দিন, মুহাম্মদ আবদুল রহীম, মাওলানা ড. আনোয়ার হক, মাওলানা ড. হামেদ রেজা নঈমী ও দাউদ ইসলাম। বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম আবাদকারীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে সর্বপ্রথম যাঁর নাম আসে, সে মহান মনীষীর নাম পীর বদর আউলিয়া। এই চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে প্রাচীন ইমারত হিসেবেও স্বীকৃত পীর বদর আউলিয়ার দরগাহ। অনুপম স্থাপত্যে গড়ে ওঠা সুপ্রাচীন এই দরগাহ চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত হলেও কালের বিবর্তনে অনেকটাই যতেœর অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে ওই দরগাহের প্রতি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ঐতিহাসিক স্থাপনার প্রতি যেভাবে উদাসীনতা দেখাচ্ছে, এতে আবারও প্রমাণ হয়, এদেশে মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও তৎসংক্রান্ত বিষয়াদি বরাবরই নিগৃহীত হয়। এছাড়াও এখানে যে ইসলাম বিকশিতই হয়েছে সুফিসাধকদের দ্বারা, সে ইসলামের আবরণে গা ঢাকা দিয়ে এই সুফিসাধকদের চর্চাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ধীরে-ধীরে। যা বাধাপ্রদান করছে পীর বদর আউলিয়ার মতো মহান সাধকদের নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করার ক্ষেত্রে।
বক্তারা আরো বলেন, চট্টগ্রাম আবাদকারী এই মহান সুফিসাধকের প্রভাব এখনো পর্যন্ত এই বন্দরনগরীতে বিদ্যমান। চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকার অন্যতম লালদিঘী সন্নিবেশিত জেলরোড এলাকা ঘুরে আসলেই একজন পর্যটক বদরপাতি নামক স্থানের সাথে পরিচিত হবেন, যা মূলত পীর বদর আউলিয়ার নামানুসারেই নামকরণকৃত। এছাড়াও বদর পীরের স্মৃতিবিজড়িত চেরাগী পাহাড় অঞ্চল এখনো এই মহান সাধকের অবদান মাথা উঁচু করে জানিয়ে দেয় চট্টলাবাসীকে। এই অঞ্চলে ইসলামের শান্তির বাণী প্রচারে নিজের সারাজীবন নিয়োজিতকারী এই মহান পীরের হাজারো অবদানের পরও চট্টগ্রামের স্থাপনাসমূহের একটিও বদর পীরের নামানুসারে না করাটা আমাদের জন্যেই কষ্টের ও হতাশার। নতুন প্রজন্মকে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ও সুফিধারার সাথে পরিচিত করতে পীর বদর আউলিয়াসহ চট্টগ্রামে ইসলাম প্রচারে অবদান রাখা প্রতিজন মহান সাধকদের যথাসম্মানে স্মরণ করার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিল্প কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি রাখেন বক্তারা।
অতিথিদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন পীরে তরিকত গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, রেজাউল করিম তালুকদার, মাস্টার আবুল হোসেন, মাওলানা নিজামউদ্দিন, মাওলানা ইকবাল হোসেন কাদেরী, পীরে তরিকত মাওলানা আবু নওশাদ নঈমী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কামরুল ইসলাম, শফিউল বশর নঈমী, কুতুব উদ্দীন চৌধুরী, মুহিবুল্লাহ, আদনান তাহসিন, তারেকুর ইসলাম, রবিউল হাসান, তোফাজ্জেল হোসেন আকিল, আইনান আশরাফী, আরমান হোসেন, হান্নান, মাহমুদুর রহমান, মাহফুজ প্রমুখ।