বৃহস্পতিবার - ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আগামী বাজেটে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে

সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষনাধর্মী সংগঠন সমাজ সমীক্ষা সংঘ এর আয়োজনে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জনগণের জন্য বাজেট শীর্ষক প্রাক্-বাজেট গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাক বাজেট গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিক্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর জয়েন্ট ডাইরেক্টর অব রির্সাচ ফাল্গুনী রেজা। প্রাক বাজেট গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সমাজ সমীক্ষা সংঘের সভাপতি কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু। উক্ত প্রাক বাজেট গোলটেবিল আলোচনায়আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার মানুষের বাজেট ভাবনা তুলে ধরেনপ্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ সিকান্দর খান, আই.ই.বি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, টি.ইউ.সি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি তপন দত্ত, মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবেশবিদ ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী, ব্যবসায়ী নেতা মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, ডক্টরস্ ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. আরিফ বাচ্চু, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবু, সাবেক কাউন্সিলর এইচ.এম সোহেল, চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, স্বনির্ভর ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান উন্নয়নকর্মী মো: মশিউর রহমান, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি যুবনেতা মো: শাহ আলম, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র জি.এম তাওসিফ সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃবৃন্দ।গোলটেবিল আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ সমীক্ষা সংঘের নির্বাহী পরিচালক কল্লোল দাশ, শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের পরিচালক শিহাব চৌধুরী বিপ্লব। আলোচনা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সমাজ সমীক্ষা সংঘের যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ মিনহাজ।

মূল প্রবন্ধে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিক্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর জয়েন্ট ডাইরেক্টর অব রির্সাচ ফাল্গুনী রেজা উল্লেখ করেন, করোনা পরবর্তীতে বাংলাদেশের অর্থনীতি মাত্র ঘুরে দাঁড়াচ্ছিলো তখনই বিশ^ব্যাপী যুদ্ধপরিস্থিতির কারণে বৈশি^ক বাজারে দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতি দেখা দেয়। বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া, খাদ্যদ্রব্যসহ জীবনযাত্রার মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে যখন দেশ দাঁড়িয়ে তখন একই বাস্তবতায় ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচন আমাদের সামনে চলে এসেছে। এই বিবেচনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট যদিও একটা প্রাক নির্বাচনী বাজেট তবুও অর্থনীতির পুনরুদ্ধার বিবেচনায় এই বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
আগামী বাজেট হবে বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট এবং আকারের দিক থেকে এটিই হবে দেশের বৃহত্তম বাজেট যা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১২শতাংশ বেশি। এই বিশাল আকারের আগামী বাজেটে জনগণের কল্যাণে বিশেষ মনোযোগ

দিতে হবে। বর্ধিত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, বাজেট ঘাটতি সীমার মধ্যে রাখা, সরকারী খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, আইএমএফ এর শর্তপূরণ করতে গিয়ে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যর উপর ভূর্তুকি তুলে দেয়াতে দ্রব্যমূল্যর উর্দ্ধগতির কারণে জনগণের নাভিশ^াস হয়েছে। এই কারণে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি মধ্যবিত্ত ও নিম্মমধ্যবিত্ত শ্রেনী ক্রমেই ধ্বংস হয়ে দ্ররিদ্র শ্রেনীতে পরিণত হচ্ছে। অর্থনীতির চালিকাশক্তি এই শ্রেনীকে বাঁচানো না গেলে অচিরেই দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে।
বক্তারা আরো বলেন, শিক্ষাখাতে আর্থিক বিনিয়োগ ও সরকারী বাজেট বাড়িয়ে এটিতে কর্মমূখী বাজেটে রুপান্তরের সুপারিশ করেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিষয় মাথায় রেখে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে এবং এর ফলে মানুষের কর্মসংস্থান ও আয় দুইটিই বাড়বে।
বক্তারা বলেন, ধনী গরীবের বৈষম্যবৃদ্ধির বাজেট করা যাবে না। আইএমএফ এর শর্তপূরণ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে ধনীকে আরো ধনী এবং গরীবকে আরো গরীব করার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। জনগণের প্রকৃত কল্যাণে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn