বৃহস্পতিবার - ২৬শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ১লা মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

হাশিমপুর আফজল সিকদার জামে মসজিদ — ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন

হাশিমপুর আফজল সিকদার জামে মসজিদ — ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন
——————————————
সোহেল মো. ফখরুদ-দীন
—————————————-

চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খুনিয়ার পাড়ায় অবস্থিত হাশিমপুর আফজল সিকদার জামে মসজিদ একটি ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো এই মসজিদটি কেবল ধর্মীয় উপাসনার স্থান নয়, বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক ও ইতিহাসবাহী প্রত্নসম্পদ হিসেবেও বিবেচিত।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের গাছবাড়ীয়া বরুমতি ব্রীজের পূর্ব পাশে এই মসজিদটির অবস্থান। প্রাচীন স্থাপত্যের ছোঁয়া পাওয়া যায় মসজিদের মূল ভবনে। বিশাল একটি গম্বুজকে ঘিরে দুটি মাঝারি এবং চারপাশে ছোট ছোট পিলার-আকৃতির গম্বুজ রয়েছে, যা একতলা বিশিষ্ট মসজিদটিকে করে তুলেছে নজরকাড়া। মসজিদের সম্মুখে একটি দ্বিতল ভবন এবং পার্শ্বে টিনসেডের ঘর রয়েছে, যা মুসল্লিদের বাড়তি সুবিধা দেয়। ঈদের জামাত কিংবা জুমার নামাজে এখানে বিপুল মুসল্লির সমাগম ঘটে, যা স্থানীয়দের ধর্মীয় সচেতনতারও পরিচায়ক।

মসজিদটির পাশে রয়েছে জানাজার নামাজের জন্য একটি মাঠ, কবরস্থান, মক্তব, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি বিশাল পুকুর। এর ফলে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্মীয় ও সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। মসজিদের ভেতরের দেয়ালে প্রাচীন নকশা অঙ্কিত রয়েছে, যা ঐতিহাসিক স্থাপত্যের গৌরবময় দিক তুলে ধরে। পরিচর্যার মাধ্যমে মসজিদটি আরও সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে, যা স্থানীয়দের পাশাপাশি দর্শনার্থীদেরও আকর্ষণ করছে। আমি নিজেও প্রায় আট বছর আগে বন্ধু মহিউদ্দিন চৌধুরী ইছা, সাফাত বিন সানাউল্লাহ ও কবি মানজুর সহ কয়েকবার এই মসজিদটি পরিদর্শন করেছি। প্রতিবারই নতুনভাবে মুগ্ধ হয়েছি এই স্থাপনার প্রাচীনতা, নান্দনিকতা ও ধর্মীয় গুরুত্ব দেখে।

এই মসজিদটি যদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তবে তা কেবল স্থানীয় পর্যায়েই নয়, বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এক ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। এটি মুসলিম জাতির গৌরবময় অতীতকে সামনে তুলে ধরতে পারে এবং নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্য চেনাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
——-

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn