লোহাগড়া বাজারে জাল রশিদে চাঁদাবাজির অভিযোগ: নির্লজ্জ অপচেষ্টায় জড়িত একটি অসাধু চক্র
নড়াইল জেলার লোহাগড়া বাজারে সম্প্রতি সংঘটিত হয়েছে এক নজিরবিহীন চাঁদাবাজির ঘটনা। নির্দিষ্ট কমিটির অনুমোদন ছাড়াই একটি অসাধু চক্র ভুয়া রশিদ বই ছাপিয়ে, বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দুই দিনের ব্যবধানে প্রায় ১৯ হাজার ৮ শত টাকা জোরপূর্বক আদায় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাজার বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো:রাজু আহমেদ বাপ্পি জানান, “আমি গত কিছুদিন ঢাকায় চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছিলাম। ফিরে এসে জানতে পারি, বাজারে আকিদুল মোল্লা, আজিজার সরদার, খোকন সরদার, নজরুলসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি নতুন রশিদ বই ছাপিয়ে বিভিন্ন দোকান থেকে টাকা আদায় করছে। তারা দাবি করছে, এটি নাকি বিএনপির নির্দেশে হচ্ছে, অথচ বিএনপির কেউই এই বিষয়ে অবগত নয়।”
বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানা গেছে, তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে এই চাঁদাবাজি চালানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা স্পষ্টভাবে জানান, “আমরা কোনোভাবেই নির্বাচিত কমিটির বাইরে কাউকে টাকা দিতে রাজি নই।”
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল রহমান বলেন, “বাজারে একটি বৈধ নির্বাচিত কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির বাইরে কেউ যদি জোরপূর্বক অর্থ আদায় করে, তা সরাসরি চাঁদাবাজির পর্যায়ে পড়ে। আমি ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্তরা নিজেদের 'সমন্বয় কমিটি' দাবি করে বাজারের নাইটগার্ড উজ্জ্বলকে দিয়ে টাকা তুলিয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা উজ্জ্বলের সঙ্গে কথা বললে তিনি স্বীকার করেন, “আকিদুল মোল্লা, আজিজার সরদার, খোকন সরদার ও নজরুলসহ কয়েকজন আমাকে টাকা তুলতে বলেন, আমি দোকানগুলো থেকে প্রায় ১৯ হাজার ৮ শত টাকা তুলে তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।” এবং টাকা তোলার সময় ও তারা আমার সাথে ছিল। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, আমি নির্বাচিত কমিটির অনুমতি ছাড়াই টাকা তুলেছি।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই অসাধু কর্মকাণ্ড শনিবার (২১ জুন) বিকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। যা স্পষ্ট করে যে, বাজারের বাইরে একটি চাঁদাবাজ চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করে আসছে।
প্রশ্ন রইল—তাদের এই অপতৎপরতা কতদিন চলবে? আর প্রশাসন কি এবার শক্ত হাতে দমন করবে এই অসাধু চক্রকে?
লোহাগড়া বাজারের সচেতন ব্যবসায়ীদের একটাই দাবি—বাজারে যেন শৃঙ্খলা বজায় থাকে, এবং কেউ যেন ক্ষমতার দাপটে ব্যবসায়ী সমাজকে জিম্মি করতে না পারে।