বৃহস্পতিবার - ২৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

বড়লেখায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গ করে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

বড়লেখায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গ করে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

 

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ডিমাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গ করে সরকারি গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিতভাবে দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষক মীর মুহিবুর রহমান বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের (প্রায় ৫০ বছরের পুরাতন) একটি আকাশি গাছ কেটে ফেলেন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। প্রথমে গাছটির ডালপালা ও কাঠ দুটি গাড়িতে করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে গত ৯ মে, বিদ্যালয় ছুটির দিনে গাছটিকে ৯টি খন্ডে ভাগ করে আবারও নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি দেখাতে পারেননি। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জানান,পার্শ্ববর্তী জমির মালিকের ফসলের উপর গাছটি পড়ে গিয়েছিল। তার চাপে তিনি গাছটি কেটে স্কুল মাঠে রাখেন। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় গাছটি বিক্রি করেন। কাটানো বাবত সাড়ে চার হাজার টাকা শ্রমিক ব্যয় মিটিয়ে অবশিষ্ট ১ হাজার টাকা তিনি সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। তবে এলাকাবাসী জানান, তাদের লিখিত অভিযোগের পর তিনি এই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। যা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম, এলাকার বাসিন্দা সুমন আহমদ, মুজিবুর রহমান, ফয়জুর রহমান, গিয়াস উদ্দিন, আলী হোসেন, আব্দুল মুকিত প্রমুখ অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে গাছটি বিক্রির ব্যবস্থা নিলে সরকারের ৫০/৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হতো। কিন্তু তিনি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রথমে গাছটি কাটেন। তৎক্ষণাৎ কিছু অংশ এবং পরে গাছের পুরো অংশই বাড়িতে নিয়ে যান। অভিযোগকারিরা বলেন, ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক গাছ বিক্রি বাবত মাত্র ১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। অর্ধলক্ষাধিক টাকার গাছের মূল্য মাত্র ১ হাজার টাকা পরিশোধে এলাকায় হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। এটিও প্রধান শিক্ষকের বড় ধরণের দুর্নীতি বলা যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম জুবায়ের আলম বলেন, আমি ইউএনও স্যারের নির্দেশে সরেজমিন পরিদর্শন করে গাছ কাটার তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিধি ভঙ্গ করে প্রধান শিক্ষক গাছ কেটে নিয়েছেন সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা করেননি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে করেছেন বলে প্রধান শিক্ষক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। গাছ কাটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিছুই অবগত নন।

ইউএনও তাহমিনা আক্তার জানান, রোববার স্কুলের সরকারি গাছ আত্মসাতের একটি লিখিত অভিযোগ পান। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn