
বকেয়ার কারণে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন, কিশোরগঞ্জের ২ হাসপাতালে
বকেয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় কিশোরগঞ্জের দুটি হাসপাতালের রোগী ও চিকিৎসকরা কয়েক ঘণ্টা দুর্ভোগের মধ্যে কাটিয়েছেন।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা ১০ মিনিট এবং ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল।
প্রচন্ড গরমের মধ্যে এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ও বহির্বিভাগে আগত রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হেলিশ রঞ্জন সরকার বলেন, “বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়টি আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় বিল পরিশোধ করা যায়নি। জুন মাসের শেষ দিকে জুলাইয়ে নতুন অর্থবছরের বরাদ্দ এলে বিল পরিশোধ সম্ভব ছিল। কিন্তু এইটুকু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ ধৈর্য ধরেনি। হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পাঠিয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন তারা।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “২৪ বছরের কর্মজীবনে হাসপাতালের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়ার ঘটনা প্রথম দেখলাম।”
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, “হাসপাতালের কাছে আট মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ এক কোটি আট লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এজন্য নোটিশ প্রদানসহ সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সকাল ৯টায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে বিল পরিশোধের আশ্বাস দিলে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়।”
টানা তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বন্ধ ছিল হাসপাতালের সব কার্যক্রম। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
অপরদিকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় গরমে চরম বিপাকে পড়েন হাসপাতালের রোগীরা।
পিডিবি ভৈরব আবাসিক বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, “হাসপাতালের কাছে বকেয়া বিদুৎ বিল বাবদ ৪১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। বকেয়া পরিমাণ প্রতি মাসেই বাড়ছিল। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও পরিশোধ না করায় সকাল ৯টার দিকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
অনেকবার বলার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দুপুর ১টায় পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়।”
হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম বলেন, “সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে আজ লিখিতভাবে জানানো হয়নি। তবে মৌখিকভাবে আগেই জানানো হয়েছিল। হাসপাতাল ১০০ শয্যার হলেও সরকারি সুবিধা পাওয়া যায় ৫০ শয্যার মত। এ অবস্থায় রোগীর চাপ বেশি হওযায় বিদ্যুৎ খরচও বেশি আসে। এর সাথে যোগ হয়েছে ২০ শয্যার একটি ট্রমা সেন্টার, যার কার্যক্রমে আলাদা তহবিল না থাকলেও বিদ্যুৎ ব্যবহার চলছে।
এর ফলে ৪১ লাখ টাকার বকেয়ার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বকেয়া ২৩ লাখ, আর ১৮ লাখ টাকা বকেয়া ট্রমা সেন্টারের। ট্রমা সেন্টারের জন্য আলাদা বাজেট না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকেই এই বিল পরিশোধ করতে হয়।”