
ডেনিশ নারীর প্রেমে ২৪ছর
সফল প্রেমিক বরগুনার সাংবাদিক মান্নু
১৯৯৬ সালে ডেনমার্কের থাকাকালীন অবস্থায় ওখানকার ডেনিশ নারী রোমানা মারিয়ার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরের বছরেই ওখানকার রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয় তাদের। ১৯৯৭সালের সেপ্টেম্বরের দিকে সবাইকে ছেড়ে মান্নুর হাত ধরে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্নে দুজনে পাড়ি জমান বাংলাদেশে। বরগুনায় এসে একটি ক্লিনিক ব্যবসা স্থাপন করেন দুজনে মিলে। কিন্তু তখনকার স্থানীয় রাজনীতির শিকার হয়ে সাড়ে তিন বছরের মাথায় ক্লিনিক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় তাদের। তখন মাহবুবুল আলম মান্নু তার স্ত্রী রোমানা মারিয়াকে ডেনমার্কে পাঠিয়ে দেন। কথা ছিল কিছুদিনের মধ্যেই মান্নু ডেনমার্কে চলে যাবেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! মান্নু যেকোনো কারণেই ডেনমার্কে আর ফিরে যেতে পারেননি। ওদিকে রোমানা মারিয়া মান্নুর অপেক্ষায় থেকে থেকে দিন কাটিয়েছেন দীর্ঘ বছর। এক পর্যায়ে রোমানা মারিয়া রাগে-ক্ষোভে-কষ্টে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং ডিভোর্স নামা পাঠিয়ে দেন।
৯৯’ /২০০০সালের কথা। তখনকার সময় ইন্টারনেট ব্যবস্থা, ফেসবুক কল্পনার বাইরে ছিল। এমনকি মোবাইল ফোনও তেমন সহজলভ্য ছিল না। একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তারা দুজন। হাল ছেড়ে দেন মান্নু। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে রোমানা মারিয়া তার হারানো প্রেমকে খুঁজে বের করেন। গত ৮/৯ মাস ধরে মাহবুবুল আলম মান্নুকে ফেসবুকে ফলো করতে থাকেন। এরপর এই বছরের জানুয়ারির ১৬ তারিখে রোমানা মারিয়া ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ করেন মান্নুর সাথে। শুরু হলো নতুন করে পথচলা। কাতার এয়ারলাইন্সে করে ৯ এপ্রিল সকাল ৯-২৫মিনিটের সময়ের হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। ফুল হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন মাহবুবুল আলম মান্নু। গতকাল ১০ এপ্রিল বিকেলে তাকে নিয়ে বরগুনায় চলে আসেন। এ সময় বরগুনা বাস স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে থানাপাড়ায় তার বাসা পর্যন্ত মান্নুর অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সহকর্মী সাংবাদিকদের পদচারনায় মুখরিত হয়। নতুন করে আবারো মুসলিম রীতি অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
তবে এত বছরে মান্নু দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসারী হতে পারতেন কিন্তু রোমানা মারিয়ার প্রেমের শক্ত বন্ধনে তিনি একাই কাটিয়েছেন এতটা বছর। মাহবুবুল আলম মান্নু সত্যিকারের প্রেমিক বটে। শুভ কামনা জানাই তাদের দুজনের জন্য। তাদের সংসার আনন্দের হোক।