ইটভাটায় যাচ্ছে বনের কাঠ-নীরব প্রশাসন ও বনবিভাগ
চলতি শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামের রাউজানে বনাঞ্চলের চারা গাছ নিধনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। উপজেলার সবুজে ঘেরা পাহাড়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়নের চারা গাছ কেটে লাকড়ি করে চাঁদের গাড়ি জিপ যোগে ইটভাটায় পাচার করছে একটি বনদস্যু সিন্ডিকেট।রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন,বৃক্ষভানপুর,আইলীখীল,ওয়াহেদুল খলী, পূর্ব রাউজানসহ ৩০টি ইটভাটায় এসব কাঠ সরবরাহ করে পাচারকারী এ সিন্ডিকেট। রাউজানের বনাঞ্চল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফটিকছড়ি- হাটহাজারী ও পার্বত্য অঞ্চল কাউখালি থেকে বনাঞ্চলের গাছে কেটে প্রতিদিন চাঁদের গাড়ি যোগে ইটভাটায় বিক্রি করছে বনদস্যুরা।সরেজমিনে দেখা গেছে, রাউজানের শহীদ জাফর সড়ক, দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী সড়ক, গহিরা- হেয়াকোঁ সড়ক ও হাফেজ বজলুল রহমান সড়ক, চট্টগ্রাম রাঙামাটি সড়ক দিয়ে রাত-দিন ইটভাটায় যাচ্ছে জালানী হিসাবে বনের কাঠ।ঘাটে ঘাটে দিতে হয় চাঁদা। প্রশাসন ও বন বিভাগের সামনে দিয়ে এসব কাঠের গাড়ি গেলেও নীরব ভূমিকা পালন করছে তারা। দিন দিন উজাড় হয়ে যাচ্ছে বন। ইটভাটায় লাকড়ি পোড়ানো পাশাপাশি গিলে খাচ্ছে কৃষি জমি ও পাহাড় টিলার মাটি। রাউজানে পাহাড় ও বন ঘেঁষে গড়ে উঠা ইটভাটায় প্রশাসনের কোন প্রভাব পড়ে না। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে চলছে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো ও মাটি কাটা মহোৎসব। পূর্ব রাউজানের ইট ভাটাগুলো কিভাবে পাহাড় টিলা, কৃষি জমি ধ্বংস করছে ওই খানে গেলে বুঝাই যায়। একইভাবে শহীদ জাফর সড়কের বৃন্দাবন ও বৃক্ষভানপুর এলাকায় পাহাড় টিলা, কৃষি জমি ও বনের গাছ রেহাই পাচ্ছেনা। ফলে দিন দিন প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সূতে গ. আইনে কোন ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে কাঠ ব্যবহার করলে তিন বৎসরের কারাদন্ড বা অনধিক তিন লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ঘ আইনে বর্ণিত নিষিদ্ধ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করলে পাঁচ বৎসরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দণ্ডে দন্ডিত হবেন। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের এ আইন মানছে না রাউজানের ইট ভাটাগুলো। জালানী হিসাবে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে শত শত টন বনের কাঠ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান ঢালা বিট কাম চেক স্টেশন কর্মকর্তা পল্লব কুমার সাহা বলেন, রাউজানে কোন গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়না। কেউ অবৈধভাবে বনাঞ্চল ও সমাজিক বনায়নের গাছ কাটে এমন তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করি।রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার অজয় দেব শীল জানান, কোন গাড়ি থেকে পুলিশ টাকা নেন না। আমাদের নিষিদ্ধ আছে। যদি থানার কোন পুলিশ কোন গাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার খবর পেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি রিদুয়ানুল ইসলাম বলেন, রাউজানের‘কোন ইটের ভাটায় পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ করলে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনীয় তাদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।