
১১ বছর ধরে বসুন্ধরায় চলছিল অন্ধকার নারীচক্রের ফাঁদ: অশ্লীল ভিডিও, ব্ল্যাকমেইল ও নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র
ঢাকার অন্যতম অভিজাত আবাসিক এলাকা বসুন্ধরায় দীর্ঘ ১১ বছর ধরে চলে আসছিল এক নারীনিয়ন্ত্রিত চক্রের ভয়াবহ অপরাধ কর্মকাণ্ড। গোপন ফাঁদে ফেলে পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে, পরে তাদের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করত এই চক্র। সম্প্রতি পুলিশের একটি বিশেষ অভিযানে এই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তদন্তে জানা গেছে, চক্রটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ফাঁদ পাতত। প্রলোভন ও প্রতারণার মাধ্যমে পুরুষদের একটি নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে ডেকে এনে সেখানেই গোপনে ভিডিও ধারণ করা হতো। এরপর সেই ভিডিও ব্যবহার করে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত অপরাধীরা। শুধু তাই নয়, এসব ভিডিও অনলাইনে বিক্রিও করত তারা, যা দেশের সাইবার নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলার জন্য এক ভয়ানক হুমকি।
এ ঘটনার পর আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। বসুন্ধরারই আরেকটি ফ্ল্যাটে তরুণদের আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে আরও দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি তাদের ভয় দেখিয়ে নানাভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হতো।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই চক্রের পেছনে রয়েছে একটি সুসংগঠিত নেটওয়ার্ক, যারা শুধু রাজধানীতে নয়, দেশের বিভিন্ন জেলাতেও একইভাবে অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তে বেরিয়ে আসছে আরও ভয়াবহ সব তথ্য।
মানবিকতার বিরুদ্ধে বড় হুমকি
এই ধরণের অপরাধ শুধু ব্যক্তির জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলে না, সমাজের নৈতিক ভিত্তিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। বিশেষ করে অভিজাত আবাসিক এলাকায় এ ধরণের অপরাধ দীর্ঘদিন ধরে চলায় বাসিন্দাদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সচেতন হোন, প্রতিবাদ করুন..
যারা এ ধরনের অপরাধের শিকার হয়েছেন বা হতে পারেন, তাদের সাহসিকতার সঙ্গে আইনের দ্বারস্থ হওয়া উচিত। অপরাধীর পরিচয়, আর্থিক প্রভাব কিংবা প্রভাবশালী মহলের নাম দেখে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। একইসঙ্গে সমাজের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত এসব ঘটনা নিয়ে মুখ খোলা, সচেতনতা ছড়ানো এবং অপরাধ দমনে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করা।