শুক্রবার - ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

হবিগঞ্জের মিরপুর শ্রীমঙ্গল সড়কে ঘনঘন ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

হবিগঞ্জের মিরপুর শ্রীমঙ্গল সড়কে ঘনঘন ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

 

হবিগঞ্জের বাহুবলের মিরপুর- শ্রীমঙ্গল সড়ক ক্রমেই অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ঢাকা-সিলেট পুরাতন এ মহাসড়কে গাছ ফেলে বিগত ২ মাসে ছোট বড় অন্তত ৬ টি ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। মুছাই পাহাড়ে লেবু, আনারস, চা ও রাবার বাগান ঘেরা আঞ্চলিক এই মহাসড়কের নিরাপত্তায় রয়েছে বাহুবল থানার অধীনে কামাইছড়া পুলিশ ফাঁড়ি অপর প্রান্তে শ্রীমঙ্গল উপজেলার লছনায় রয়েছে সাতগাঁও হাইওয়ে থানা ।

মুছাই পাহাড়ের দুই প্রান্তে দুটি পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে সড়কটি।এতে আশপাশের বাসিন্দাসহ এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের শ্রমিক ও যাত্রী সাধারণ চরম নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়েছেন। ঘন ঘন ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও উল্লেখযোগ্য কোন দূর্বৃত্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকে।

অভিযোগ উঠেছে, ডাকাতির খবর জানালেও পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে অহেতুক বিলম্বের কারণে ডাকাতরা নিরাপদে চলে যায়। লছনা হাইওয়ে পুলিশ পাহাড়ের ভিতর টহলে থাকার কথা থাকলেও ৬ কিলোমিটার দূরে তারা মিরপুর চৌমুহনায় চায়ের আড্ডায় মগ্ন থাকেন। অথচ লছনা থেকে কামাইছড়া পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। আর কামাইছড়া থেকে মিরপুর ৬ কিলোমিটার। মাত্র ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সড়কের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে উল্লেখিত দুই পুলিশ ফাঁড়ি।

সর্বশেষ দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে ১ এপ্রিল দিবাগত রাত ১ টার দিকে। কামাইছড়া পুলিশ ফাঁড়ির দু’শ গজ দূরে মিরপুর- শ্রীমঙ্গল সড়কের ফিনলে চা বাগানের ভিতর। ১০/১২ জনের একদল ডাকাত সড়কে গাছ ফেলে যানবাহন আটকিয়ে লুটতরাজ চালায়। সশস্ত্র ডাকাতরা দুটি প্রাইভেটকার ও রুপসী বাংলা বাসের স্টাফ ও যাত্রীদের নিকট থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসহ মালামাল নিয়ে যায়।

অর্ধঘন্টা ঘন্টা সময় ধরে চলা ডাকাতিকালে হবিগঞ্জ সিলেট বিরতিহীন, ঢাকা সিলেট রুটের শ্যামলী ও হানিফ বাসে ডাকাতরা হানা না দেওয়ায় অনেকের মাঝে কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায় ত্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরা ১০/১২ জনের ডাকাতরা কামাইছড়া লামাবাজার ক্রস করে রশিদপুরের দিকে চলে গেলেও পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়নি।

এ ব্যাপারে ফিনলে চা বাগানের বাবু আব্দুস সালামের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাতের আঁধারে তার অধীনে চা বাগানে কর্মরত পাহারাদারদের তথ্য দিতে গড়িমসি করেন। পাহারাদাররা স্থানীয় অনেক ডাকতকে চিনতে পারলেও সালাম বাবু ধামাচাপা দিচ্ছেন।

কামাইছড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুক মিয়া বলেন, কামাইছড়া থেকে মুছাই পর্যন্ত পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ডাকাত দলের সেফ জোন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি বলেন, এক মাসের ব্যবধানে তিনবার এ সড়কে ডাকাতি হয়েছে।

বড়গাঁও গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, বাহুবল ও চুনারুঘাট থানার পুলিশ যৌথ অভিযান দিলে অনেক ডাকাতকে আটক করা সম্ভব হবে।

সাতগাঁও হাইওয়ে থানার ওসি সাইফুর রহমান বলেন, ডাকাতির খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই ডাকাতরা নিরাপদে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, চুনারুঘাটের রানীগাঁও এবং আশেপাশের কিছু চোর-ডাকাত এ সব ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে ।
কামাইছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই এখলাছুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn