
সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সীমান্তে সরকারের লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেড তৈরি করে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে ভারত থেকে পাঁচার করছে কয়লা, পাথর, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, কাঠ, বাঁশ, গরু, ছাগল, চিনি ও সুপারীসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য। তবে পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে মদ-গাঁজা ও চিনিসহ ১১জন মাদক চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে পৃথক ভাবে সবাইকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ সোমবার (১৭ জুলাই) ভোরে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে চিনি পাচাঁর করে জেলার মধ্যনগর উপজেলার হামিদপুর পশ্চিম ইকরছড়ি খালে ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করার সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৮লাখ ১০হাজার টাকা মূল্যের ৫০ কেজি ওজনের ১৮০ বস্তা চিনিসহ চোরাকারবারী অপু মিয়া (৩০), রাজন মিয়া (২৫), কামরুল মিয়া (৩২), শামীম মিয়া (৩১), আরিফ মিয়া (২৮), মনির মিয়া (২৪) ও মনসুর মিয়া (৩২) কে হাতে নাতে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ভারত থেকে গাঁজা পাচাঁর করে নিয়ে যাওয়ার সময় জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার পূর্ব বাংলাবাজারের মিতালী মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ৭শ গ্রাম গাঁজাসহ জামাল উদ্দিন (৪৫) কে গ্রেফতার করা হয়। এরআগে সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমান মদ পাচাঁর করে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের লিয়াকতগঞ্জ বাজারে অবস্থিত একটি ফার্নিচারের দোকানে নিয়ে মজুত করে মাদক ব্যবসায়ীরা। এখবর পেরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৭৫ বোতল মদসহ ইকবাল হোসেন (৪২) ও সাইফুর রহমান (৩১) কে গ্রেফতার করে। তারা দোয়ারাবাজার উপজেলার চানপুর গ্রামের বাসিন্দা। অপরদিকে পাচাঁরকৃত মদ নিয়ে ছাতক উপজেলার নোয়ারাই বাজারে মজুত করার সময় ৩৯ বোতল মদসহ শাওন মিয়া (২৩) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্তের দুধেরআউটা গ্রামের সামনে অবস্থিত পাটলাই নদীতে গডফাদার হাবিব সারোয়ার তোতলা আজাদের নেতৃত্বে তার সোর্স পরিচয়ধারী ওই গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া ও তার ভাই মনির মিয়া ২টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ১০০মেঃটন কয়লাসহ মদ ও ইয়াবা, এই সীমান্তের লালঘাট এলাকা দিয়ে সোর্স ইয়াবা কালাম মিয়া, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া ও মানিক মিয়া ১টি কাঠ বডি ও ১টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে ৫০মেঃটন কয়লা, বাঁশ ও মদ, চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সোর্স আনোয়ার হোসেন বাবলু, সোহেল মিয়া, সুলতান মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, হারুন মিয়াগং ২টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা দিয়ে ৬৫ মেঃটন কয়লার সাথে মদ, লালঘাট আদর্শ গ্রাম এলাকা দিয়ে আদম আলী, জামির আলী, রুবেল মিয়াগং ১টি স্টিলবড়ি বোঝাই করে ৩৫ মেঃটন কয়লা ও কলাগাঁও-জঙ্গলবাড়ি এলাকা দিয়ে সোর্স রফ মিয়া, রিপন মিয়া, নেকবর আলী, সাইফুল মিয়া ও লেংড়া জামালগং ৪টি স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকায় ১২০ মেঃটন চোরাই কয়লা পাচাঁর করাসহ টেকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়া, রজনীলাইন, চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া, রাজাই, কড়ইগড়, বারেকটিলা ও লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, পুরান লাউড়, শাহআরেফিন মোকাম এলাকা দিয়ে আরো বিপুল পরিমান কয়লা ও পাথর পাচাঁর করে ছিলা বাজার, শিমুল বাগান ও লাউড়গড় বাজারের আশেপাশে প্রকাশে মজুত করাসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত নাসির উদ্দিন বিড়ি, মদ, গাঁজা, কাঠ ও ইয়াবা পাচাঁর করে কামড়াবন্দ, শিমুলতলা, কাউকান্দি, তরং বাজার, নতুন বাজার, বালিজুরী, বাদাঘাট বাজার ও তাহিরপুর মসজিদ হাটি গ্রামে নিয়ে মজুত রেখে বিক্রি করা হয়। কিন্তু এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর, মধ্যনগন থানার এসআই সুবাস চন্দ্র বর্মন ও ছাতক থানার ওসি মাঈনুল জাকির জানান- বিশেষ ক্ষমতা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করে গ্রেফতারকৃত ১১জন চোরাকারবারীকে আজ সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাঘারে পাঠানো হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।