
সীমান্ত ইস্যু নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অর্বাচীন মন্তব্য ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিবৃতি
অবৈধ ও অসাংবিধানিক দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার মাত্র কয়েক মাসে জনগণের স্বস্তির নিঃশ্বাস কেড়ে নিয়েছে। সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন, শাসন-শোষণে জনগণ হাঁসফাঁস করছে। দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ এই সরকার পরিকল্পিতভাবে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সীমান্তে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে এবং ভারতবিরোধী ধুয়া তুলছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের মাধ্যমে তাতে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে: জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মিথ্যাচার করে বলছে, ‘অতীতে সীমান্ত নিয়ে কোনো পদক্ষেপ ছিল না। সীমান্তের সমস্যাকে সে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সীমান্তে সমস্যা তৈরি করা একটি অসুস্থ মানসিকতা ও অকূটনৈতিকসুলভ আচরণ। বরং আত্মমর্যাদার ভিত্তিতে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারাই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ সরকারের প্রধান কাজ এবং কূটনৈতিক সাফল্য। কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিবেশির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষার বিপরীতে কৃত্রিম সংকট তৈরিকেই সফলতা বিবেচনা করছে। অথচ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে আত্মমর্যাদা বজায় রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সীমান্তে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখা ছিল শেখ হাসিনার সরকারের অগ্রাধিকার। ফলে শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের বদৌলতে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সমুদ্র বিজয় করেছে। শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের ফলেই ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধান এবং ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এতে রাষ্ট্রবিহীন মানুষ তাঁদের নাগরিক মর্যাদা পেয়েছে। বিগত ৫৩ বছরে প্রতিবেশীর সঙ্গে বোঝাপড়া করে বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই। জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়ে কেউই এই সমস্যার সমাধান তো দূরের কথা, সামনেও আনার সক্ষমতা দেখায় নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সীমান্তে তেমন উত্তেজনা ও সংকট সৃষ্টি হয়নি। ছোটখাটো সমস্যা হলেও শেখ হাসিনার নির্দেশে সেসবের সুস্পষ্ট জবাব দেয়া হয়েছে এবং সংকটের সমাধানও করা হয়েছে। যার সাক্ষী বিজিবি’র(পূর্বতন বিডিআর) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।
বর্তমান সরকার সীমান্তে কীভাবে সুরক্ষা দিচ্ছে তা টেকনাফ সীমান্তে নজর দিলেই পরিস্কার বোঝা যায়। দেশবাসী দেখছে, কীভাবে সীমান্ত অরক্ষিত এবং টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের জনগণ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। অপরদিকে সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে বাগাড়ম্বর করে যাচ্ছে। আমরা এই অনির্বাচিত, অদক্ষ ও নৈরাজ্যবাদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাই। পারলে কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের যেসব অমীমাংসিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমাধান করে দেখাক।
অসাংবিধানিক সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একদা বিজিবি’র(পূর্বতন বিডিআর) মহাপরিচালক ছিল। সে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হয়েই বিডিআর হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও শাস্তিপ্রাপ্ত প্রায় চার শতাধিক আসামীকে মুক্তি দিয়েছেন। দেশাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের প্রতি তার পক্ষপাতিত্বের হেতু কী? বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নীলনকশার সঙ্গে বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকারীদের মতো চিহ্নিত অপরাধী এবং দেশের এককালের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ছেড়ে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করছে। আমরা সরকারের এহেন অতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।