শুক্রবার - ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

সীতাকুণ্ডকে অপরাধমুক্ত,সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যেতে চাই: লায়ন ইমরান

চট্টগ্রাম-৪ আসনটি  জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর ৯ ও ১০ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এখানে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে নতুন মূখ হিসেবে জাতীয় নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হয়েছেন দিদারুল আলম। কিন্তু এবার লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান আওয়ামী লীগ থেকে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড-৪ আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

যেন দল ও দলের নেতাকর্মীরা আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরানের কাছে গিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়নযজ্ঞ চালাচ্ছে তা জনগণের ঘরে ঘরে পৌছানো যাবে। বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যশী ছিলেন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান। ফলে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ডের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায় থেকে বেড়ে ওঠা শিল্পপতি সিমনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হোক।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সীতাকুণ্ডের তৃণমূলে বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরানের। জানা গেছে আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনে মনোনোয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বর্তমান এমপি দিদারুল আলম ছাড়াও লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরানের একটি শক্ত অবস্থান রয়েছে।

স্থানীয় একটি সুত্র জানায় লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান সীতাকুণ্ড উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও শিল্পপতি ইমতিয়াজ ইকরামের ছোট ভাই। লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান দৈনিক আনন্দবার্তাকে তিনি একান্তভাবে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। বলেছেন, সীতাকুণ্ডের সাথে আমার রয়েছে আত্মার সম্পর্কের কথা।

দৈনিক আনন্দবার্তা : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনি সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম-৪ আসন থেকে এমপি হতে আগ্রহী কেন?
লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান : জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর চেতনার আওয়ামী লীগ আমার প্রাণের বাতিঘর এবং আমার পথচলার শক্তি। জীবনে বুঝ আসার পর থেকে আমি এমন কিছু করতে চেয়েছি যার মাধ্যমে দেশের তথা জাতির মুখ বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল করতে পারব। সেজন্যই পদার্থবিদ্যার মত কঠিন বিষয়ে অনার্স সহ মাস্টার্স করে বিজ্ঞানের জয়যাত্রায় সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে চেয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তৈরির স্বপ্ন সেই শৈশব থেকেই আমাকে উদ্বলিত করেছে, উৎসাহ যুগিয়েছে এবং কঠিন জয়যাত্রায় উস্কে দিয়েছে। সময়ের কঠিন বাস্তবতায় এক সময়ের জাঁদরেল মহান নেতা এম আর সিদ্দিকীর সীতাকুন্ড আজ যোগ্য নেতেৃত্ব শূন্য, দল আজ বহু ভাগে বিভক্ত। অশিক্ষা আর অপরাধ প্রবণতা আমাদের এ জনপদকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। যদিও জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশপ্রেমিক সরকার এ খাতে উন্নয়নের জন্য ব্যাপক বরাদ্দ এবং কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর মহান আদশের্র উত্তরসূরি হিসেবে চুপ করে বসে থাকা আমার বিবেকের কাছে সমীচীন বলে মনে হচ্ছে না। নিজেকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য জীবনের ১৫ বছরেরও অধিক সময় ব্যয় করেছি লেখাপড়া শেষ করার জন্যে এবং আরও ৩৫ বছরেরও অধিক সময় ব্যয় করেছি ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবারের জন্য। জীবনের বাকি সময়গুলো ব্যয় করতে চাই বড় পরিসরে মানব সেবায়, যাতে মৃত্যুর পর আমার আত্মা অনন্ত জগতে শান্তিতে থাকতে পারে। বড় পরিসরে মানবসেবায় জনপ্রতিনিধি হওয়া আবশ্যক এবং জনপ্রতিনিধি হতে হলে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হতে হয়, যা রাজনীতি করা ছাড়া সম্ভব নয়। এটাই একমাত্র কারণ আমার রাজনীতিতে আসার এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম-০৪ আসন থেকে এমপি মনোনয়নের প্রত্যাশী হওয়া – যাহাতে আমার পরিবারও সম্মতি দিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা বাণিজ্য সন্তানদের হাতে অর্পণ করেই জনগণের সেবার তরে রাজনীতিতে পদার্পণ করেছি রাজনীতিতে এসেছি রাজনীতির প্রভাবে ব্যবসা করার জন্য নয়!

দৈনিক আনন্দবার্তা : বিগত সংসদ নির্বাচনেও আপনি মনোনয়ন চেয়ে পাননি, যদি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পান তাহলে বিকল্প কিছু ভাবছেন কি?
লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান : সবকিছুর একটা প্রক্রিয়া, নানান পর্যায় আছে। ২০১৮ সালে সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম-০৪ আসন থেকে এমপি হবো, এলাকাবাসীর উন্নয়নে মনোনিবেশ করবো এবং নিজের পরিচয় জানান দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েই সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছি, যাতে করে আমার প্রিয় সীতাকুণ্ডের আওয়ামী পরিবারের মুজিবীয় সৈনিকেরা আমার উপর আস্থা রাখার জন্য যথেষ্ঠ সুযোগ পান। আমি জানি, আমার দৌঁড় কতটুকু, আমি সম্যক অবগত এলাকাবাসী তথা দেশ ও জাতির জন্য আমি কি করতে পারবো। আমার এলাকাবাসী, আমার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ আমার ন্যায় নিষ্ঠা, সামর্থ্য, যোগ্যতা, সাহস এবং ত্যাগ এর শক্তি দিয়েছেন তা আমি পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে সীতাকুন্ডবাসীর নীরব কান্না মুছে দিতে পারব। এ দৃঢ় বিশ্বাস আমার আছে ইনশাআল্লাহ।

দৈনিক আনন্দবার্তা : আপনার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাখ্যা করুন!
লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান : আমার জন্মস্থান এবং আশৈশবের চারণভূমি বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার ও ঐতিহ্যের আকর সীতাকুণ্ড প্রাচীনকাল থেকে সমৃদ্ধ আত্মনিভরশীল জনপদ। আল্লাহর অশেষ দয়ায় এখানে ক্ষুধা-মন্দা কিংবা দারিদ্রের হাহাকার নেই। এখানে গোছানো সংঘবদ্ধ ও একনিষ্ঠ নেতাকর্মীর প্রয়োজন। আমার প্রথম কাজ হবে সীতাকুণ্ডকে দলীয় কোন্দলের ভয়াবহ বলয় থেকে বের করে আনা। আমি কোনপ্রকার কোন্দলের সাথে জড়িত নই এবং কোন্দল পছন্দ করিনা। কোন্দল হতে পারে এজন্য আমার সেবামূলক কর্মকাণ্ডে র্বতমানে ৩ গ্রুপে বিভক্ত সীতাকুণ্ড আওয়ামী লীগের কোন গ্রুপের নেতাকর্মীদেরকে নিজের সাথে সম্পৃক্ত হতে সচেতনভাবে সতর্কতার সহিত বারণ করে আসছি। যাতে করে আমাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মধ্যে ৪র্থ গ্রুপ তৈরি না হয়। সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ পেলে সীতাকুণ্ড আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী, সমর্থক সবাইকে সাথে নিয়ে একই ছাতার নীচে অবস্থান করে দলকে সুসংগঠিত করে তারপর সবাই একসাথে মিলে সীতাকুণ্ডবাসীর সেবা করবো। মানবতার তরে সেবাদানের পাশাপাশি পরিবেশের উন্নয়ন ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অত্যাধুনিক রূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ধারণা জনসাধারণের মাঝে পৌছে দিতে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।

দৈনিক আনন্দবার্তা : মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে এলাকার জনসাধারণের জন্য প্রতিশ্রুতি কি?
লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান : আমি সেনা পরিবারের সুশৃঙ্খল পরিবেশে বেড়ে ওঠা বাবা রয়েল বৃটিশ এয়ারফোর্সের সদস্য মরহুম মোহাম্মদ ইসমাইল ও মা মরহুমা সালেহা বেগমের সুশিক্ষিত সন্তান হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বড়ভাই স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সমগ্র শিল্পাঞ্চলের বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং আমার অভিভাবক ও রাজনৈতিক গুরু আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইকবাল এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ ইকরামের সাহচর্যে বেড়ে ওঠা একজন রাজনীতিবিদ। সন্ত্রাস, হানাহানি কিংবা দখলবাজি কিংবা কোন্দলের ধারেকাছে না থাকা পরিচ্ছন্ন ইমেজ নিয়ে চলা এই আমি লায়ন মোহাম্মদ ইমরান সীতাকুণ্ডকে অপরাধমুক্ত সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যেতে চাই। এ ব্যাপারে আমি সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করি।

দৈনিক আনন্দবার্তা : সংসদ সদস্য না হয়েও এলাকাবাসীর জন্য কি কি করেছেন?
লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইমরান : মানুষ চাইলেই মানুষের জন্য সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে অনেক কিছুই করতে পারে, তবে সামর্থ্য যোগান থাকার পরও চাইলেই সবকিছু করা সম্ভব না। আর, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় তা-তো আরও অসম্ভব একটা ব্যাপার। এই ধরেন, ফৌজদারহাট কে.এম. হাইস্কুল, যেখানে আমার শৈশব ও কৈশোরের বড় একটা সময় কেটেছে। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আমাকে সামর্থ্য দিয়েছেন, এ স্কুলের জন্য কিছু করবার। কিন্তু এখন আমি লায়ন মোহাম্মদ ইমরান স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু করতে চাইলে স্বভাবতঃই প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে। আমার পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও প্রধান শিক্ষককে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাননীয় সংসদ সদস্য থেকে গ্রিন সিগনাল নিয়ে তবেই আমাকে অনুমতি দিতে হবে। এখন যদি মাননীয় এমপি কোন কারণে ‘না’ বলেন তাহলে সম্মানিত প্রধান শিক্ষক কিংবা আমার জন্য বিষয়টি বিব্রতকর হবে না? এটাই এখন বর্তমান সীতাকুণ্ডের প্রকৃত চেহারা। তাই বলে আমি বসে নেই। আমি ও আমার স্ত্রী মিসেস নিশাত ইমরান লায়ন্স ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত আছি। আমার স্ত্রী মিসেস নিশাত ইমরান লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগংয়ের সভাপতি ছিলেন এবং বর্তমানে ডিস্ট্রিক্ট গভর্নরের বিশেষ কো-অরডিনেটর। বিগত প্রায় ১৩ বছর ধরে আমরা লায়ন্স ক্লাবের ব্যানারে এলাকার জনগণের জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসা ক্যাম্প সহ নানান কর্মসূচির মাধ্যমে নিয়মিত কাজ করেছি। দান খয়রাতরে পরমিাণ এবং মান অত্যন্ত ভাল হওয়ার কারণে এলাকার লোকজনরে কাছে অনেক সুনাম আছে। সম্প্রতি ভাটিয়ারী জেলেপাড়ায় আগুন লাগার পর দলীয় নেতাকর্মীদের আগেই আমি আমার লোকজন নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি এবং সহায়তা প্রদান করেছি।
পারিবারিকভাবে আমরা ১৯৭৫ সালের পর থেকেই চরম বিরূপ পরিবেশে বড়ভাই আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইকবালের হাত ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলোর ডোনার হিসেবে কাজ করছি। যখন যেখানে যা প্রয়োজন তা সরবারহ করেছি এবং এখনো করছি। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রাক্তন শ্রমমন্ত্রী এম এ মান্নান, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাবেক এমপি ইসহাক মিঞা সহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীদের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে আওয়ামী লীগকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছি। বর্তমানে যুবলীগ নেতা সাজ্জাত হোসেন সহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট কর্তৃক অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রধান উপদেষ্টা এবং কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা ঢাকার উপদেষ্টা হিসেবে চট্টগ্রাম, ঢাকা, ইত্যাদি স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের খরচাদি দীর্ঘদিন ধরে বহন করে আসছি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn