রবিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সাবেক প্রতিমন্ত্রীর এপিএস বানেশ্বর সরকারি কলেজে না এসেও বেতন গ্রহনের অভিযোগ

সাবেক প্রতিমন্ত্রীর এপিএস বানেশ্বর সরকারি কলেজে না এসেও বেতন গ্রহনের অভিযোগ

 

পুঠিয়া-দুর্গাপুরে সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবকে প্রতিমন্ত্রী দারার এপিএস বদিউজ্জামান রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন উপস্থিত না হয়ে ও কোন ক্লাস না করিয়ে বেতন গ্রহন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে গোপনে আঁতাত করে বর্তমানে হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল ১০ টার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে “আমার সোনার বাংলায় ফ্যাসিবাদের ঠাই নাই” স্লোগানে ফ্যাসিবাদের আশ্রয়দাতা, দুর্নীতিবাজ ও সরকারি বিধি লংঘনকারী বানেশ্বর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদ রানার পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধনের প্রস্তুতির সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হলে মানববন্ধন বন্ধ করা হয়। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। পরে বানেশ্বর ইউনিয়নের সদস্য আলম মেম্বার, রুপস সরকারসহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা এসে মানববন্ধন বন্ধ করে সবাইকে নিয়ে আগামী সোমবার বসে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান এই ইউপি সদস্য আলম মেম্বার।
বানেশ্বর সরকার কলেজের প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন শিক্ষক তাদের মৌখিক অভিযোগে বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদ রানার বিরুদ্ধে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ আমরা তার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।
আওয়ামী প্রতিমন্ত্রী দারার এপিএস বদিউজ্জামান কলেজে প্রায় ১০ বছর আসেনি ও কোন ক্লাস নেয়নি। সে একই সাথে এপিএস হিসাবে ও কলেজের শিক্ষক হিসেবে বেতন গ্রহন করে। তার পরেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার সাথে গোপনে আঁতাত করে বর্তমানে হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এত অপরাধ সত্তেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। মাসুদ রানা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কলেজের প্রশাসনিক ও শিক্ষা ব্যবস্থা চরম পর্যায়ে ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষক কর্মচারী ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করে না। কলেজের শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস নেয় না সে জন্য ছাত্র ছাত্রীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের প্রতি ভীষন ক্ষিপ্ত। বর্তমানে কলেজে শৃংখলা বলতে কিছু নেই। তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে কলেজের চেইন অব কমান্ড সম্পূর্নভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা-পড়া ব্যাঘাত ঘটছে। এভাবে কলেজ চললে শিক্ষার্থীদের ফলাফল খুব খারাপ হবে। এভাবে আমাদের কলেজ চলতে পারে না।
কলেজের পিয়ন আঃ হামিদের ২০২১ সালে ৬০ বছর পূর্তি হওয়া সত্বেও সরকারি বিধি লংঘন করে জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে বয়স কমিয়ে ও এমপিও সিটে তার বয়স সংসোধন না করে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তাকে সরকারি বেতন প্রদান করা হয়েছে। প্রদর্শক আবু বকর সিদ্দিকের ৪/৫ টি মামলা আছে ও ১ টিতে তার সাজা হওয়ার সত্তেও তথ্য গোপোন করে ও সরকারি বিধি লংঘন করে মামলা নাই মর্মে প্রত্যয়ন দিয়ে তাকে সরকারি বেতন প্রদান করা হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসোরদের সাথে সে আঁতাত করে চলে।
এ বিষয়ে বানেশ্বর সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্র আবুল বাসার ও অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সৈকত বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল স্যার আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী দারার এপিএস বদিউজ্জামান এই কলেজের শিক্ষক কিন্তু আমরা জানিনা। তাকে কোন দিন কলেজে দেখিনি। তাকেসহ আ’লীগের সাথে আঁতাত এবং বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সাথে তিনি জড়িত আছেন।
কলেজের পিয়ন হাজেরা বেগম বলেন, সাবেক এপিএস শিক্ষক বদিউজ্জামান বদি দীর্ঘদিন কলেজে আসেন না। কিন্তু বর্তমানে সে কখন আসে আর কখন চলে যায় কেউ দেখেনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বানেশ্বর সরকারি কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মাসুদ রানা জানান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দ্বারার এপিএস বদিউজ্জামান(বদি)আমাদের কলেজের শিক্ষক তার সম্পর্কে আমি পাঁচ তারিখের পরে পুঠিয়া থানায় খোঁজ নিয়ে দেখেছি তার নামে কোন মামলা নেই। তবে আমি তাকে মৌখিকভাবে সাসপেন্ড করে রেখেছি কোন বেতন দেওয়া হয় না। আমার জানামতে আমি কোন অনিয়ম-দূর্নীতি করি নাই কলেজ বিল্ডিং এর বিলবোর্ডের টাকা আমার ডয়ারে আছে। আমার নামে যত অভিযোগ আছে অভিযোগগুলো সত্য নয় আপনারা খোঁজখবর নিয়ে দেখতে পারেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn