
সাতক্ষীরার বড় দল কলেজে নিবন্ধন জালিয়াতির মামলায় দীর্ঘ ৩ বছর বেতন বন্ধ থাকলেও হঠাৎ বেতন উত্তোলনে জনমনে ক্ষোভ
সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার বড়দল আফতাব উদ্দিন কলেজিয়েট স্কুলের ভূয়া নিবন্ধন দেখিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত প্রভাষক পদে চাকরি করে বেতন ভাতা উত্তোলন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে প্রতিকার প্রার্থনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করা হয়েছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বড়দল আফতাব উদ্দিন কলেজের স্কুলের তৎকালিন অধ্যক্ষকে সরাসরি উপস্থিত হতে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। কুমিরা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আদিত্য কুমার ব্যানার্জী বাদী হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগে জানা গেছে কলেজের ব্যবস্থার বিভাগের প্রভাষক শিবপদ সানাকে ২০০২ সালে এম,এ এর সনদ না থাকলেও জালিয়াতির আশ্রায় গ্রহন করে তাকে প্রভাষক পদে নিয়োগপ্রদান করা হয়।শিবপদ২০০১ সালে বিকম ব্যবস্থাপনা এবং ২০০৪ সালে এম কম ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পাস করেন । অথচ তিনি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এম কম পাশের দু’বছর আগে এম কম পাশের সনদ দেখিয়ে চাকরি গ্রহণ করেন ।এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ ঢাকার সহকারী পরিচালক (কলেজ তিন )মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ৭ জি/২২৫(ক-৩)/১০/৮১৪৩/২ তারিখ ১-০৬-২০১০ নং স্বারকে এমপিও ভুক্তি প্রসঙ্গে উক্ত প্রভাষক শিবপদ সানাকে নিয়োগকালে মাস্টার্স সনদ না থাকায় নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি। নিয়োগ বৈধকরণে প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি উল্লেখ করে আপত্তি থাকায় এমপিও ভুক্তি সম্ভব হচ্ছে না বলে অবহিত করেন তৎকালীন কলেজ কর্তৃপক্ষকে। তৎকালীন কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের দুর্নীতি ও জালিয়াতি ধরা পড়েছে বুঝতে পেরে ১১-১১-২০১০তারিখে বাংলাবাজার ও প্রভাত ফেরি নামে দুটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন । প্রভাষক শিবপ্রদ সানা তখন ২৪-১১- ২০১০ তারিখ নিয়োগ পেতে আবেদন করেন।২০১০ সালে নিবন্ধন থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল ।কিন্তু তিনি ভুয়া নিবন্ধন দেখিয়ে আবারো প্রচারনার আশ্রয় গ্রহণ করেন। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষর মাধ্যমে জানা যায় শিবপদ সানার পিতার নাম করুণাময় সানা মাতা মৃত উর্মিলা সানা অথচ তিনি মোঃ রেজাউল করিম পিতা জিয়াউর রহমান রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৮০০১৯৮৩০/৮রোল নাম্বার ২০১১০ ৪৫১ পাশের সন ২০০৮ বিষয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের নিবন্ধন জালিয়াতি করে নিজের নামে নিবন্ধন দেখিয়ে প্রভাষক পদে আবেদন করেন এবং কর্তৃপক্ষ তাকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রদান করেন । নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নিকট শিবপদ সানার নিবন্ধন ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় বড় দল আফতাব উদ্দিন কলেজিয়েট স্কুলকে আশা শুনি থানায় মামলা করতে বলেন। তৎকালীন অধ্যক্ষ আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যা এখনো চলমান। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সুপারিশ ক্রমে বড় দল আফতাব উদ্দিন কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক শিবপদর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক বড় দল আফতাবউদ্দিন কলেজিয়েট স্কুলের গভর্নিং বডি তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে বেতন বন্ধ রাখেন। সূত্র মতে জানা যায় প্রভাষক শিবপদ সানাকে দীর্ঘ তিন বছর অর্থাৎ একুশ সাল থেকে চব্বিশ সাল পর্যন্ত তাকে বেতন বন্ধ রাখা হয়। নিবন্ধন জালিয়াতের মামলায় শিবপদ সানা ছয় মাস এবং অন্য একটি মামলায় আরোএক মাস মোট সাত মাস জেল হাজত বরণ করেন। সরকারের নতুন অধ্যাদেশের ফাকে জায়গা করে নিয়ে প্রতারক শিবপদসানা ইএফটির পূরণ করে গত ডিসেম্বর থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। বেতন ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বাবলুর রহমান নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি একটি লিখিত চিঠি তাকে দিয়েছি সে যেন কোন প্রকার বেতন ভাতা উত্তোলন না করেন এবং যদি উত্তোলন করে থাকে তাহলে সমস্ত দায়ভার সে বহন করবে। এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেন আমি সংশ্লিষ্ট রূপালী ব্যাংক বরাবর একটি চিঠিও প্রেরণ করেছি। এ ব্যাপারে শিক্ষক শিবপদ নিকট যোগাযোগ করতে চাইলে তার ফোনটি রিসিভ হয়নি। হঠাৎ করে শিবপদ সানার বেতন উত্তোলন সম্পর্কে এলাকায় প্রচার হলে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন বেতন বন্ধ থাকা ,বেতন চালু হল কেমন করে এমন একটি জিজ্ঞাসা সকলের মনে সঞ্চারিত হচ্ছে।