বুধবার - ২৫শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১১ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৯শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

সাতক্ষীরায় সচেতন নারী সমাজের মানববন্ধন

সাতক্ষীরায় সচেতন নারী সমাজের মানববন্ধন

সাতক্ষীরায় সচেতন নারী সমাজের আয়োজিত মানববন্ধনের বক্তারা বলেছেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের জমা যেসব প্রস্তাবনা সরাসরি কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তা অবিলম্বে বাতিল কতে হবে। নারী কমিশনের এই সংস্কার প্রস্তাব প্রমাণ করে, এটা পতিত ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের পক্ষের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের দলিল। সুতরাং এ প্রস্তাবনা শুধু বাতিলই নয়, পুরো নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে। বক্তারা সকল পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও ধর্মীয় স্কলারদের নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ কমিটি গঠন করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারী সংস্কার নীতিমালা প্রণয়নের জোর দাবি জানান।

বুধবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংবিধান বিরোধী নারী কমিশনের বিতর্কিত স্ববিরোধী সুপারিশ বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এ দাবি জানান।

বক্তারা আরও বলেন, কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে রাষ্ট্রের দ্বান্দ্বিক অবস্থান তৈরি করবে। সমাজ বনাম রাষ্ট্র এবং ধর্ম বনাম নারীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে এ কন্ট্রোভার্সিয়েল প্রতিবেদন। কমিশনের প্রস্তাবিত প্রতিবেদনের পাতায় পাতায় ধর্মকে নারী বৈষম্যের অন্যতম কারণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেশের সকল সচেতন নারী সমাজ প্রস্তাবিত এ সুপারিশকে ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ জন্য বক্তারা এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিলের জোর দাবি জানান।

সচেতন নারী সমাজ সাতক্ষীরার আহ্বায়ক জয়নব পারভিনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নুরুন নাহার ইতির পরিচালনায় বক্তৃতা করেন নারী নেত্রী জামানারা বেগন, রাজিয়া সুলতানা, ফজিলা খাতুন, ফতেমা খাতুন, রাবেয়া খাতুন প্রমুখ।

বক্তারা আরও বলেন, ১৭টি অধ্যায়ে ৪৩৩টি সুপারিশ সম্বলিত ৩০০ পৃষ্ঠারও অধিক এ সংস্কার প্রতিবেদন পড়ে মনে হয়েছে যে, নারী সমতা, নারী উন্নয়ন ও নারী ক্ষমতায়নের মুখরোচক শব্দ দিয়ে তারা এদেশের নারী সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চায়। নারীদেরকে পুরুষের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। কমিশনের প্রস্তবনাগুলো জাতিকে চূড়ান্ত বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়ার সূদুর প্রসারী একটি উদ্যোগ। এই কমিশনে সমাজের সকল শ্রেণি পেশার নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়নি।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের জমা দেওয়া ১০টির মতো প্রস্তাবনা সরাসরি কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কার করে সব ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে নারী-পুরুষের কথিত সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করতে পারবে। যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এসব প্রস্তাবনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করারও প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। বক্তারা বলেন, বক্তব্য স্পষ্ট যে, দেশ ও ইসলামের স্বার্থে এবং নারীদের স্বার্থে এ কমিশন বাতিল করতে হবে। কারণ, দেশের মানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ কমিশন দাঁড়িয়েছে। তারা পরিবার ও সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা করছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn