খাগড়াছড়ির গুইমারার সাধুপাড়ায় উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সরকারি বাগানের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। সমিতির চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বাবলুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এতে নাম জড়িয়েছে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির পাটোয়ারীরও।
পল্লী উন্নয়ন বোর্ড পরিচালিত সমিতির গাছগুলো সদস্যরা প্রায় ৪০ বছর ধরে পরিচর্যা করছেন। স্থানীয় সমবায়ীরা দাবি করেছেন, বাগান থেকে পৌনে দু’শ গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। তবে বিআরডিবির স্থানীয় কর্মকর্তারা গাছের সংখ্যা কমিয়ে সমিতির চেয়ারম্যান বাবলুকে পার পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন ইউএনও, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ও সমিতির চেয়ারম্যান নগেন্দ্র নারায়ণ ত্রিপুরা মিলে সাধুপাড়া এলাকায় ১০ একর জায়গা সমিতির নামে বন্দোবস্ত নিয়ে বাগান করেন। তখন থেকে সমিতির সদস্যরা গাছের পরিচর্যা করছেন। এতে সেগুন, গর্জন, চম্পা, চাপালিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।
সম্প্রতি বাগান পরিষ্কার করার নামে ডালপালা ছাঁটাই করার সময় বাবলু ও হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ১৯২টি বড় গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ করেছেন সদস্যরা। সরেজমিন বড় বড় গাছের কেটে ফেলা গুঁড়িও পাওয়া গেছে। স্থানীয় সমবায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তিনি আশির দশকে এ বাগানে গাছ লাগিয়েছেন। এত বছরে অংশীজন শত শত সমবায়ী আশায় বুক বেঁধে আছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান রক্ষক হয়ে ভক্ষকের কাজ করেছেন।
বাইল্যাছড়ি মৌজার হেডম্যান ত্রিদিব নারায়ণ ত্রিপুরা বলেন, তাঁর প্রয়াত বাবা তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান নগেন্দ্র নারায়ণ ত্রিপুরা নিজ উদ্যোগে ভূমি নির্ধারণ করে প্রশাসনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। সে বাগানের ৪০ বছর বয়সী গাছ কাটা গুরুতর অপরাধ। তিনি এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সমিতির সদস্যরা জানান, গাছ কাটা নিয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এতে তিনি ২৬টি গাছের কথা উল্লেখ করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কথা বলতে রাজি হননি। আর সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাবলু বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা চলছে।
গুইমারা থানার ওসি রাজীব কর বলেন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সমিতির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি বাগানের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগে জিডি করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে কাটা অনেক গাছ জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।