
শ্যামনগরে নয়টি চোরাই মটরসাইকেলসহ ৬১ মামলার পাঁচ আসামী গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বৃহস্পতিবার দিনভর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে থানা পুলিশ নয়টি চোরাই মটর সাইকেল উদ্ধার করেছে। এসময় মটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেটের প্রধান আবু বক্কার ওরফে বাক্কার (৫৫)সহ তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা, যশোর কতোয়ালী ও খুলনার ডুমুরিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মটর সাইকেল চুরি, ডাকাতি, অবৈধ অস্ত্র সংরক্ষণের অভিযোগে ৬১টি মামলা রয়েছে। শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুত্রে জানা যায় বাহিনী প্রধান আবু বক্কার শ্যামনগর উপজেলার চিংড়িখালী গ্রামের মৃত আরশাদ আলীর ছেলে। তার গ্রেপ্তারকৃত সহযোগীরা হলো- কালিগঞ্জ উপজেলার কাকশিয়ালী গ্রামের মৃত আহসান গাজীর ছেলে সালাউদ্দীন(৩৪), শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান নান্নু(৩৫), গাবুরা গ্রামের আতিকুর রহমান সাজু(৩০) ও ৯ নং সোরা গ্রামের ছাকাত আলী গাজীর ছেলে শাহাজান হোসেন(৩৫)। শাহাজান সুন্দরবনে জলদস্যু হিসেবে তৎপর থাকার পর ২০১৬ সালে র্যাব-৮ এর মাধ্যমে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির আরও জানান গত সোমবার রাতে উপজেলার যতীন্দ্রনগর গ্রামের শাহিনুর রহমান বাবুর মটর সাইকেল চুরি হয়। তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মাঠে নেমে বুধবার দিবাগত রাতে বাবুর মটর সাইকেল উদ্ধারের পাশাপাশি চক্রের সদস্য সালাউদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে সালাউদ্দীনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের প্রধান ২৭ মামলার আসামী আবু বক্কার ওরফে বাক্কারকে চারটি চোরাই মটর সাইকেলসহ গ্রেপ্তার করে।
একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গাবুরা থেকে বাক্কার বাহিনীর সদস্য সাজু, নান্নু ও শাহাজানকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আরও চারটি চোরাই মটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এসময় ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বরের ভিত্তিতে মালিকানা নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার সকালে তিনজনকে তাদের চুরি যাওয়ার মটর সাইকেলগুলো বুঝিয়ে দেয়া হয়।
চুরি যাওয়া মটর সাইকেল ফিরে পাওয়া হরিদাস মন্ডল জানান প্রায় একমাস আগে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলে তার মটর সাইকেল চুরি হয়। অনেক খোঁজাখুজির পরও না পেয়ে তিনি চুরি যাওয়া মটর সাইকেল ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন।
তবে আকস্মিকভাবে শুক্রবার সকালে শ্যামনগর থানা থেকে মোবাইলে কল পেয়ে তিনি বিস্মিত হয়ে মটর সাইকেল নিতে এসেছেন। চুরি যাওয়া মটর সাইকেল ফিরে পেতে চক্রের হোতা আবু বক্কারের কাছে গিয়েও ব্যর্থ হন বলে দাবি সুন্দরবনে কাঁকড়া শিকারের সাথে জড়িত হরিদাসের।
নকিপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন জানান প্রায় ছয় মাস আগে তার মটর সাইকেল চুরি হয়। এভাবে চুরি যাওয়া মটর সাইকেল ফিরে পেয়ে তিনি শ্যামনগর থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান মটর সাইকেল উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলায় আদালতের মাধ্যমে আসামীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে আরও চোরাই মটর সাইকেলের বিষয়ে তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হবে।
চক্রের অপরাপর সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হবে-জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের ‘ওস্তাদ’ আবু বক্কার মাত্র এক/দেড় মিনিটের মধ্যে চাবি খুলে মটর সাইকেলের নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রাখেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।