ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের উল্টো রথযাত্রায় নওফেল
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে এদেশ পাকিস্তান-আফগানিস্তান হবে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে এদেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তানে পরিণত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তাই প্রধানমন্ত্রীর শতায়ু কামনা করে সকলের কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেছেন তিনি।
বুধবার (২৮ জুন) বিকাল ৪টায় নগরীর সিনেমা প্যালেস মোড়ে ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের উদ্যোগে আয়োজিত উল্টো রথযাত্রা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
নওফেল বলেন, আজকের উল্টো রথযাত্রা একটি সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য একটি বিশেষ দিন এবং বিরহের ক্ষণ। সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে ঐক্যতার জন্য এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের বারবার দরকার। তিনি এদেশে সকল ধর্মের মানুষের জন্য মাতৃরূপে সৃষ্টিকর্তার বিশেষ উপহার। কারণ তার নেতৃত্বে এদেশ আজ অর্থনৈতিক মুক্তির পেয়েছে। শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশ থেকে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করেছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্র চলছে। এইবৃহত্তর ভারতবর্ষের দুইপাশে পাকিস্তান তৈরি করে ভারতবর্ষকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে। যা আগেও ছিল এখনো আছে। বাংলাদেশ যাতে পাকিস্তান না হয়, বাংলাদেশ যাতে আফগানিস্তান না হয় সেজন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। যারা এক সময় এদেশে জঙ্গি, উলফাসহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নবাদীদের জায়গা দিয়ে এই পবিত্রভূমিকে অপবিত্র করার চেষ্টা করেছে সৃষ্টিকর্তার অভিশাপে আজ তারা ক্ষমতায় নেই। আর কোনদিন ক্ষমতায় যেতেও পারবে না। শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে এবং ক্ষমতায় থাকলে এদেশ আর পেছনে যাবে না। উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাবে। বক্তব্যের শেষে রথযাত্রায় আগত সকল ভক্তদেরকে ধন্যবাদ জানান।
সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগ মনেপ্রাণে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দুরা নিরাপদ এবং আওয়ামী লীগই কেবল সকল ধর্মের মানুষকে সাথে নিয়ে কাজ করে। ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি গ্রæপ চেষ্টা করছে। তারা শুধু ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ তাদেরকে মন থেকে প্রত্যাহার করেছে। তাদের কোনো কথা জনগণ বিশ্বাস করে না। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন করতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ আগেও হিন্দুদের সাথে ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী। আশির্বাদক ছিলেন ভারতের শ্রীধাম বৃন্দাবন থেকে আগত শ্রীপাদ মুক্তিদাতা চৈতন্য দাস ব্রহ্মচারী। উদ্বোধক ছিলেন সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রধান বক্তা ছিলেন ইসকন বাংলাদেশের সদস্য ও পুন্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, মহিলা কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, কৈবল্য ধামের ট্রাস্টি মনিলাল দাশ,চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ আচার্য্য, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক রুপেশ্বর গৌর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।
নগরীর মোড়ে মোড়ে নগরবাসীগণ উলু ধ্বনি, হরিধ্বনি,শঙ্খ ধ্বনি, মঙ্গল প্রদীপ পূজার নৈবেদ্য সহকারে জগন্নাথ-বলদেব-সুভদ্রা মহারাণীকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানান। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন পৌরাণিক সাজের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ও বৈদিক সংস্কৃতির চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রাটি সিনেমা প্যালেস থেকে শুরু হয়ে আন্দরকিল্লা, চেরাগী, জামালখান, আসকারদিঘীর পাড়, কাজির দেউড়ি, মেহেদিবাগ, গোলপাহাড় হয়ে প্রবর্তকে গিয়ে শেষ হয়।