শনিবার - ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২২শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অন্যত্র ভর্তি হওয়া যাবে না

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অন্যত্র ভর্তি হওয়া যাবে না

 

বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্টরা যুক্তরাষ্ট্রে আসার জন্য আই-২০-তে উল্লেখ করা ও ভিসায় যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকবে, তাকে সেখানেই প্রাথমিকভাবে যেতে হবে। তিনি চাইলেই কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তন করতে পারবেন না। কেউ যদি এক কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভিসা নিয়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে চান, তাহলে তাকে পোর্ট অব এন্ট্রির ইমিগ্রেশন ইন্সপেক্টর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে নাও দিতে পারেন। তাই সবাইকে সাবধান হতে হবে।
তবে অপশন আছে, কেউ চাইলে ভিসায় উল্লেখিত কলেজে যোগ দিয়ে এরপর অন্য কলেজে ট্রান্সফার হতে পারবেন। মনে রাখতে হবে, কলেজ ট্রান্সফার করলে তখন তিনি ট্রান্সফার স্টুডেন্ট হিসেবে বিবেচিত হবেন। নতুন স্টুডেন্ট হিসেবে নয়। সে ক্ষেত্রে ট্রান্সফার স্টুডেন্টরা নতুন স্টুডেন্টের মতো সব ক্ষেত্রে সব ধরনের স্কলারশিপ পান না। নতুন স্টুডেন্টদের স্কলারশিপ ও অন্যান্য সহায়তা বেশি পাওয়ার সুযোগ থাকে।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে, অনেক স্টুডেন্ট যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, সেখানে প্রথমে ভর্তি হলেও পরে স্টেট পরিবর্তন করেন। সেখানে থাকেন না। আবার কেউ কেউ অন্য স্টেটের কলেজে ভর্তি হয়ে এরপর নিউইয়র্কে চলে আসেন। অনলাইনে কেউ কেউ লেখাপড়া করেন। আবার কেউ কেউ স্টুডেন্টশিপ ধরে রাখার জন্য ইএসএল অর্থাৎ ইংরেজি শেখা শুরু করেন। ফলে কলেজগুলো যে ধরনের হিসাব করে স্টুডেন্ট ভর্তি করে, তারা সেখানে না যাওয়ার কারণে কলেজের সিটটি খালি থাক। এতে কলেজের আয় কমে যায়। খরচ চালানো কঠিন হয়ে যায়। এ দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ৫০১(সি) নন ফর প্রফিট হিসেবে পরিচালিত হয়।
সম্প্রতি ঢাকাস্থ দূতাবাস নতুন ভিসা পদ্ধতি কার্যকর করেছে। সেখানে স্টুডেন্ট (এফ এবং এম) ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় নির্ধারণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার বিষয়ে বলা হয়, আবেদনকারীর সাক্ষাৎকারের তারিখ তার আই-২০ ফর্মে উল্লেখ্য প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার ৩৬৫ দিনের মধ্যে নির্ধারণ করতে পারেন। যদিও তার ভিসা অনুমোদিত হলে তিনি আই-২০ ফর্মে উল্লেখ্য তারিখের ৩০ দিনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে তাকে প্রাথমিক প্রবেশ অবশ্যই ভিসায় উল্লেখ্য করা একই স্কুলে উপস্থিত হওয়ার জন্য হতে হবে। শিক্ষার্থী যদি প্রাথমিক প্রবেশের জন্য ভিসায় উল্লেখ্য স্কুল ব্যতীত অন্য কোনো স্কুল থেকে প্রাপ্ত ফরম আই-২০ নিয়ে আসে অথবা সে যদি অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে চায়, তাহলে পোর্ট অব এন্ট্রির ইমিগ্রেশন ইন্সপেক্টর (পিওই) সেই শিক্ষার্থীর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করতে পারেন।
ঢাকায় ইউএস অন-অভিবাসী ভিসার আবেদনকারীদের ভিসা সার্ভিসে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ কারণে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। এ জন্য নতুন সাইটও করা হয়েছে। নতুন সাইটে ভিজিট করে ভিসার আবেদন করতে হবে। আবেদন করা ও এর পরবর্তী ছয়টি ধাপের কথা বলা হয়। বাংলাদেশ থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চান, তারা চাইলে ওয়েবসাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে, জেনে ও বুঝে আবেদন করতে পারেন। আবেদন করার জন্য কারও সহায়তারও প্রয়োজন হবে না। যারা ইংরেজি ভাষায় অতটা দক্ষ নন, তারা কারও সাহায্য নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদনকারীরা ইউএস ভিসার জন্য কীভাবে আবেদন করতে হয় এবং কীভাবে বাংলাদেশের আমেরিকান দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ করতে হয়, তা জানতে পারবেন।
আবেদন করার বিষয়ে বলা হয়, প্রথমে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। কারও যদি আগে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করা থাকে, তারা লগইন করে আবেদন করতে পারবেন। নতুন সাইটে লগইন করে আবেদন শুরু করা যাবে। আবেদন শুরু করার জন্য আগেভাগেই সব নথিপত্র নিয়ে বসে আবেদন করতে বসলে সুবিধা হবে। ডিএস-১৬০ ফর্ম পূরণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, একজন আবেদনকারী আবেদন করার সময় সব সঠিক ও আপ টু ডেট তথ্য দেবেন। কেউ কোনো মিথ্যা তথ্য দেবেন না। মিথ্যা তথ্য দিলে সমস্যায় পড়তে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রে কারও পরিবারের সদস্য আছেন, এমন কেউ যদি তার জন্য আবেদন করেন, তাহলে তাকে এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের বিষয়ে সিটিকে অবহিত করতে হবে। কেউ ভিসা যদি প্রত্যাখ্যাত হয়ে থাকেন, তাও লিখতে হবে। ভিজিট ভিসা কিংবা যেকোনো ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদন করার সময় ডি-১৬০ ফর্মে যেসব তথ্য দেবেন, ভবিষ্যতে আমেরিকায় ইমিগ্র্যান্ট হতে চাইলে ওই সময়ের আপডেট তথ্য ছাড়া আগে যেসব তথ্য ছিল, সেগুলো একই রকম হবে। তাই ভেবেচিন্তে দিন-তারিখ মনে করে ফর্ম ফিলআপ করতে হবে। কেউ বিদেশে অবস্থান করলে সেখানে কার ঠিকানা দিতে হবে। আর এটি না করলে পরে যখন তিনি এ দেশে ইমিগ্র্যান্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন, তখন তার বিগত পাঁচ বছরের থাকার ও ভ্রমণ হিস্ট্রি লাগবে। সেই সঙ্গে কেউ বিদেশে থাকলে তার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে। তাই কেউ চাকরি, লেখাপড়া কিংবা বিয়ে বা ব্যবসা বা অন্য কোনো কারণে বেশি দিন বিদেশে থাকলে ওই দেশ থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিয়ে নেবেন এ জন্য যে তিনি ওই দেশে কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn