বুধবার - ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহীর বানেস্বরে পেঁয়াজের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার অর্ধশত কৃষক

রাজশাহীর বানেস্বরে পেঁয়াজের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার অর্ধশত কৃষক

 

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেস্বর বাজারে এক বীজ ব্যবসায়ীর কাছে দেশি পেঁয়াজের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার প্রায় অর্ধশত কৃষক। এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) এনামুল হক নামের এক কৃষক বাদি হয়ে পুঠিয়া থানায় এবং উপজেলা কৃষি অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বানেশ্বর বাজারে চাউল হাটাতে অবস্থিত আবির এন্টারপ্রাইজ (লাইসেন্স নং পাই-পুঠিয়া ০৮৬, খুরচা পুঠিয়া-৪৭৭) এর মালিক জুয়েল আহমেদ রাশেদ (জুয়েল) পিতা-মোঃ জালাল, গ্রাম-মৌগাছি,বানেশ্বর এর নিকট হইতে মোহনপুর উপজেলার হাটরা গ্রামের প্রায় ৫০ জন কৃষক ধাপে ধাপে বিভিন্ন সময়ে ১০-১২ কেজি করে প্রায় ৪০০ (চার শত) কেজি দেশি পেঁয়াজের বীজ ক্রয় করিলে প্রথম চালানের ২০০ কেজির মত বীজ ভাল চাষাবাদ হয় এবং পরের চালানের ২০০ কেজি পেঁয়াজের বীজে কোন ধরনের ফলন হয়নি। জমির কিছু কিছু অংশে চারা উঠলেও তা মারা যাচ্ছে। যে কারনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা এখন লোকসানের দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন।

অভিযোগকারী কৃষক এনামুল জানান, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পেঁয়াজ চাষের উপযোগী এলাকা। বানেস্বর বাজারের আবির এন্টারপ্রাইজ থেকে আমি প্রতি কেজি ৩ হাজার ৮০০ টাকা দরে ধাপে ধাপে প্রায় ৪০০ কেজি দেশি পেঁয়াজের বীজ ক্রয় করি। বীজ বিক্রির সময় ব্যবসায়ী জুয়েল শতভাগ নিশ্চিত করে দেশি পেঁয়াজের বীজ আমার কাছে বিক্রি করে। কিন্তু বপণের পর বুঝতে পারি বীজগুলো ভারতীয় কোনো কোম্পানির। বীজ ভালো অঙ্কুরিত হয়নি। জমিতে যতটুকু হয়েছিল তাও মারা যাচ্ছে। বিষয়টি বিক্রেতা জুয়েল’কে জানালে তিনি টালবাহানা করছেন। এমনকি এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করারও হুমকি দিয়েছেন বীজ ব্যবসায়ী জুয়েল। অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানাচ্ছি।

রাব্বানী নামের এক কৃষক জানান, চাষাবাদ করে তাদের সংসার চলে। চাষের সময় ঋণসহ ধার দেনা করতে হয়। ফলন পাওয়ার পর সেই ধারদেনা শোধ করেন। কিন্তু এবার ঋণ শোধ করতে পারবেন না। কারণ পেঁয়াজ বীজে তারা প্রতারিত হয়েছেন।

এছাড়াও কৃষক রউফ,মনিরুল, সবুরআলীসহ আরো অনেকে জানান, দুই নম্বর পেঁয়াজ বীজ কিনে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফলে এ মৌসুম তাদের অভাব অনটনে পার করতে হচ্ছে। প্রতারণার বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বীজ ব্যবসায়ী জুয়েল এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়েও তার সন্ধান মেলেনি

পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি তবে থানায় আসেন সাক্ষাতে কথা বলবো বলে তিনি প্রতিবেদককে জানান।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার স্মৃতি রানী বলেন, অভিযোগের বিষয়টা জানি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরোও বলেন, ভেজাল সার, বীজ ও কীটনাশকের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই অভিযান চলছে। এরইমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীকে সতর্ক করাসহ জরিমানাও করা হয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn