রবিবার - ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান

 

রাজবাড়ী জেলা শহরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালের বিরুদ্ধে জমা পড়া বিভিন্ন অনিয়ম খতিয়ে দেখতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাস। এ সময় দুদক ফরিদপুর কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের সময় হাসপাতালে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারে অনিয়ম, প্রতিদিনের ডায়েট চার্জ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ না করা, নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা, হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ, ওষুধ থাকতেও রোগীদের ওষুধ সরবরাহ না করা, সেবিকাদের স্টোরের ওষুধ পাচার করা, রোগীদের খাবারে মিনিকেট/পাইজাম চাল দেওয়ার কথা থাকলেও মোটা চাল দেওয়া, দরপত্রে মুরগির মাংস প্রতি কেজি ৩৯০ টাকা কেজি ধরা থাকলেও বয়লার মুরগি সরবরাহ করা, ৮০ জন রোগীর জন্য দেড় কেজি ডাল রান্না করাসহ বেশ কিছু অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুদক।

দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাস বলেন, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের বিরুদ্ধে বেশকিছু জমা পড়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম আজ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানকালীন সময়ে পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ না করা, নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা, আজকের ডায়েট চার্জ অনুযায়ী প্রতি রোগী যে পরিমাণ খাবার পাওয়ার কথা সেই পরিমাণ খাবার না পাওয়া, যেমন আজকে ১৬ কেজি মাংস সরবরাহ করার কথা অথচ সেখানে আমরা ১০ কেজি মাংস পেয়েছি। হাসপাতালের পরিবেশ খুব নোংরা পেয়েছি। এ ছাড়া সকল ধরনের মেডিসিন সরবরাহ না করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। এগুলো পর্যালোচনা করে আমরা বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠাব। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, দুদকের টিম সদর হাসপাতালের রান্নাঘর পরিদর্শন করে কিছু ত্রুটি পেয়েছে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে মাংস কম। বাস্তবে আমিও কম দেখেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে ঠিকাদার কম দিয়েছে অথবা যারা নিয়েছেন তারা মেপে নেননি। আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া দুদক হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সাতজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। এ ছাড়া আমি কিছু বাড়তি লোক নিয়েছি। সবসময় হাসপাতাল পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। ১০০ বেডের হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে ২০০ এর উপরে। পাশাপাশি আউটডোরে ৮০০/৯০০ রোগী প্রতিদিন সেবা নেন। প্রায় ২/৩ হাজার লোক এই হাসপাতালে প্রতিদিন আসা যাওয়া করেন। প্রতিদিন দুই-তিন হাজার লোকের পদচারণার কারণে পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা রাখা খুবই কঠিন। তারপরও আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকেই। দুদক এ বিষয়ে আমাদের অবগত করেছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn