শুক্রবার - ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীর দক্ষিণখানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজ গ্রেফতার : থানায় মামলা

চোরের দশ দিন গৃহস্তের একদিন। রাজধানীর দক্ষিণখান-উত্তরখানে বেশ কয়েক বছর ধরে দাপটের সাথে একেক সময় একেক গণমাধ্যমের পরিচয় দিয়ে কথিত কিছু সাংবাদিক নিলা, মোসাঃ নাজমা বেগম, মোঃ শুভ, মোঃ বিল্লাল, মোঃ হযরত আলী রানা, রিতা, সহ আরোও বেশ কয়েকজন একটি সিন্ডিকেট করে এলাকায় চাঁদাবাজি সহ ব্ল্যাক মেইলিং করে আসছে বলে জানা যায়। এদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। গত ২৪/০৬/২০২৩ ইং মোঃ হেমায়েত উদ্দিন ওরফে সোহেল কাজী দক্ষিণখান থানায় উল্লেখিত সকলকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ৪৮, ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৪২৭/৩৮৫/৩৮৬/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু করা হয়। মামলার বিবাদীরা কৌশলে মামলার বাদীর সাথে কসমেটিক্স ক্রয়ের বিষয়ে সম্পর্ক স্থাপন করিয়া ঘটনার দিন বাদীকে দক্ষিণখান থানা এলাকার এমারত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে আইনুজবাগ কলেজ রোড, বাসা নং- ৩০/১, আসতে বলিলে বাদী আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ ঘটিকার সময় সেখানে পৌঁছালে উল্লেখিত বিবাদীগণ সহ অজ্ঞাত নামা ৫-৬ জন বিবাদী মামলার বাদীকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। জোরপূর্বক টেনে হিচড়ে বর্ণিত বাসার নিচতলা একটি রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। মামলার বিবাদীরা বাদীর নিকট ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তারা জোর করে আমার জামা কাপড় খুলিয়া নগ্ন ছবি ভিডিও করে, টাকা না দিলে ভিডিও বাজারে ছেড়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করবে বলে ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে তারা আমাকে নিয়ে আমার দোকানে যায়, সেখান থেকে দশ হাজার টাকা নেয়। তাদের মধ্যে কথিত সাংবাদিক রানা আমার দোকান থেকে ৫ হাজার টাকার কসমেটিক্স নেয়। আমাকে ভয়ভীতি দেখাইয়া চলে যাওয়ার সময় আমার ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন আগাইয়া আসিয়া নিলা ও মোসাঃ নাজমা বেগমকে আটক করে থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। বাকী আসামীগণ কৌশলে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে থানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হলে তারা জানায়, দক্ষিণখান থানা পুলিশ তৎপর হয়ে বাকী আসামীদেরকে আটক করার নিমিত্তে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য থাকে, বেশ কিছু দিন আগে এসকল তথাকথিত সাংবাদিক নামধারী ব্ল্যাক মেইলাররা তাদের মূলহোতা উত্তরখান মাজার এলাকার মামুন খান, রোহান, শিমুলের নেতৃত্বে উল্লেখিত মামলার রানা, সহযোগী ঝর্ণা আক্তার মিতু, নিলা ও নাজমা বেগম, একজন মূলধারার সিনিয়র ফটো সাংবাদিক এ আর মজিদ শরীফকে ব্ল্যাকমেইলিং করার চেষ্টা করলে অবশেষে অন্যান্য সাংবাদিক এবং উত্তরখান থানার সাবেক ওসি হেলাল উদ্দিন শরীফকে উদ্ধার করে ব্ল্যাক মেইলিংদেরকে মৌখিক ভাবে সতর্ক করে দেয়। এসব কথিত সাংবাদিকদের যন্ত্রণায় দক্ষিণখান-উত্তরখানের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদের মধ্যে কথিত সাংবাদিক নেশাগ্রস্থ রিতা কিছুদিন আগে তার স্বামী সাগরকে উপর্যপুরি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টায় মারাত্মক জখম করে এবং সংশ্লিষ্ট মামলায় বেশ কিছুদিন জেল হাজতে ছিল বলে জানা যায়। এসব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কারণে এবং বর্তমানে তারা এলাকায় না থাকার কারণে দক্ষিণখান-উত্তরখান জুড়ে বসবাসরত মানুষের মাঝে ফিরেছে স্বস্তি। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এদেরকে এলাকাবাসী গণ পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এই ঘটনার পর ব্যবসায়ীরা মিষ্টি বিতরণ করেছে বলে জানা যায়। এ বিষয় নিয়ে উত্তরা জোনের উপ পুলিশ কমিশনারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এদের বিরুদ্ধে অনেক দিন যাবৎ বিভিন্ন অভিযোগ আসছিল। আমরা একটি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। অন্যদিকে দক্ষিণখান থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, এদেরকে প্রকৃত সাংবাদিক ও সম্পাদকরা কোন রকম আশ্রয় প্রশ্রয় যেন না দেয় এ বিষয়ে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn