
রমজান – নিয়মানুবর্তিতা, আত্মশুদ্ধি ও ক্ষুদাক্লিষ্ট মানুষের প্রতি সহমর্মিতার মাস
এম এ সবুর
রমজান মাসকে প্রশিক্ষণের মাস বলা হয়, যেখানে একজন মুসলিম দীর্ঘ এক মাস কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে জীবনযাপন করেন। সাহরি খাওয়া, পানাহার থেকে বিরত থাকা, ইফতার, তারাবির নামাজসহ নানা বিধিবিধান পালনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির সুযোগ পাওয়া যায়। নবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যে ব্যক্তি গুনাহ থেকে মুক্ত হতে ব্যর্থ হয়, সে প্রকৃত দুর্ভাগা।
রমজান মানুষের জীবনে ধৈর্য, সংযম ও সহমর্মিতা শেখায়, যা তাকে পরিশুদ্ধ জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করে। শুধু ক্ষুধা ও পিপাসা সহ্য করাই রোজার উদ্দেশ্য নয়; বরং আত্মশুদ্ধি অর্জন করাই মূল লক্ষ্য। রোজার ইতিবাচক প্রভাব ব্যক্তি ও সমাজে শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও ভালো ব্যবহারের সংস্কৃতি গড়ে তোলে। তাই রমজানের প্রকৃত শিক্ষা হলো চরিত্র সংশোধন ও মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে উত্তম জীবন গঠন করা।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি, আর রমজানে তাঁর দান-সদকার পরিমাণ বহুগুণে বেড়ে যেত। হাদিসবিশারদদের মতে, আল্লাহ রমজানে বান্দার প্রতি অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন, তাই বান্দাও দান-সদকা বৃদ্ধি করে আল্লাহর অনুগ্রহের অংশীদার হতে পারে।
রমজানে দান-সদকার মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষ উপকৃত হয় এবং তারা ইবাদতে মনোযোগী হতে পারে। পাশাপাশি ঈদের আনন্দেও তারা অংশ নিতে পারে। রমজান মানুষকে ক্ষুধার্ত থাকার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দরিদ্রদের কষ্ট অনুভব করার শিক্ষা দেয়, যা সমাজে দানশীলতা ও সহমর্মিতা বাড়ায়।
সুতরাং, আমাদের উচিত রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে অসহায় ও পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং দান-সদকার মাধ্যমে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করা।