শুক্রবার - ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা আশাশুনির সুশোভন বাছাড়

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা আশাশুনির সুশোভন বাছাড়

 

 

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এবার প্রথম হয়েছে খুলনার সুশোভন বাছাড়। এই অর্জনের মধ্যদিয়ে সে কৃতিত্বের ধারা অব্যাহত রেখেছে। সুশোভন সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়ার সুভাষ চন্দ্র বাছাড় ও বন্দনা সেনের একমাত্র ছেলে। সুশোভনের কৃতিত্বের এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে রোববার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন ভিড় করে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এমন কৃতিত্বে গর্ববোধ করেন সকলে। সুশোভন বলেন, ভালো ফলাফলের জন্য পড়ালেখার কোনো বিকল্প নাই।

সুশোভন এ বছর নগরীর সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। এর আগে, টিএনটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এসএসসি পাস করে। সুশোভন পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি প্রতিটি পরীক্ষায় সব বিষয়ে লেটার মার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং প্রতি ক্লাসে বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়েছে। দেশসেরা হয়ে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সুশোভন বাছাড়। একইসঙ্গে সুশোভনের বাবা ও মা তার শিক্ষকসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সন্তানের এমন সাফল্যে। আগামীতে সে যেন দেশ সেরা একজন চিকিৎসক হয়ে দরিদ্র মানুষের সেবা করতে পারে সেজন্য সকলের দোয়া আশীর্বাদও কামনা করেছেন তারা।

সুশোভন বলেন, পড়ালেখা হতে হবে বুঝে শুনে। সারা পাঠ্যপুস্তকে কতটুকু প্রয়োজন আর কোনটা প্রয়োজন না সেটা জেনে বুঝে পড়তে হবে। তবে নিয়মিত বইয়ের সংস্পর্শে থাকার কোনো বিকল্প নেই ভালো জ্ঞান অর্জনের জন্য। সেটাই হয়েছে আমার জীবনে। আমি এ পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক ছাড়া আর কিছুই ভাবিনি। সে কারণে প্রতিটা পরীক্ষাই সাফল্য পেয়েছি। তবে এই সাফল্যের পেছনে আমার বাবা-মা ও শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। এছাড়া আমার সহপাঠিরাও নানাভাবে সহযোগিতা করেছে।

সুশোভন আরও বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভেবেছিলাম মেধাতালিকায় সেরা ১০ জনের একজন হবো, কিন্তু প্রথম হবো এটা ছিল কল্পনাতীত। এটা হয়তো আমার ভাগ্যকে সুপ্রসন্ন করেছে। আগামীতে আমি একজন নিউরোসাইন্সের চিকিৎসক হতে চাই। একটা হাসপাতালও করতে চাই। যেখানে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেবো।

সুশোভনের মা বন্দনা সেন বলেন, আমরা ভীষণ গর্বিত। ছেলের এমন সাফল্য আমাদেরকে আনন্দসাগরে পাঠিয়েছে। খবরটি শুনে আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। এত আনন্দ পেয়েছি যে, সে কারণেই আমার চোখ দিয়ে জল এসেছে। তবে সুশোভন কখনও রাত জেগে পড়েনি, সকাল সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত শুধুমাত্র দিনের দৈনন্দিন কাজ ছাড়া সব সময় পড়ালেখা করতো। ছোটবেলা থেকে তার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। শুধু তাই নয় ছোটবেলা থেকেই সে বিভিন্ন ওষুধ নিয়ে নাড়াচাড়া করতো আর বলতো আমি একদিন বড় ডাক্তার হবো।

সুশোভনের বাবা স্কুল শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র বাছাড় বলেন, আমাদের একমাত্র সন্তান এত ভালো একটি ফল করবে এটা বুঝতে পারিনি। সৃষ্টিকর্তার কৃপা ছিল বলেই এমনটি হয়েছে। নিজের ছেলে যেন একজন ভালো মানুষ হয় সেজন্যও সকলের কাছে আশীর্বাদ চেয়েছেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn