বুধবার - ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৩শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

মামুনের ‘ম’ এবং ঠাকুরগাঁওয়ের ‘ঠাকুর’

মামুনের ‘ম’ এবং ঠাকুরগাঁওয়ের ‘ঠাকুর’

-মো. কামাল উদ্দিন

তাঁর নামের প্রথম অক্ষর ‘ম’ যেন মধুর আবেশ ছড়ায়। আর ঠাকুরগাঁওয়ের ‘ঠাকুর’ নামের ওজন যেন ইতিহাসের গম্ভীর ভার বহন করে। একসময় তিনি ছিলেন গানের মায়াজগতে এক নীরব বিপ্লবী। অসংখ্য গান তাঁর কলমের ডগায় জন্ম নিয়েছে, হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা কথারা সুরের মায়ায় বন্দী হয়েছে। কিন্তু আজ তিনি গানের জগত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সেই রঙিন ক্যানভাসে আর নতুন তুলির আঁচড় পড়ে না। কেন তিনি সরে গেলেন, সেই প্রশ্ন আজও আমাকে ভাবায়।
তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল দৈনিক ভোরের আওয়াজ এবং The Daily Banner পত্রিকার অফিসে। তিনি এখন এই দুই পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। সময়ের ব্যস্ততায় ক্লান্ত হলেও তাঁর কথার ঝরনা থেমে থাকে না। আমরা আড্ডায় মেতে উঠেছিলাম। তাঁর মুখ থেকে একের পর এক উঠে আসছিল জীবনের অজানা গল্প। প্রতিটি শব্দ যেন অতীতের দরজা খুলে দিচ্ছিল, আর আমি সেসব গল্পে ডুবে যাচ্ছিলাম।
তাঁর অভ্যাসে সময়ের ক্ষয় হয়নি। পান আর সিগারেটের ধোঁয়া এখনো তাঁকে ঘিরে থাকে। কখনো মনে হয়, এই ধোঁয়ার আস্তরণেই লুকিয়ে আছে তাঁর গল্পের আসল রঙ। ‘ম ঠাকুর’ নামটি শুনে অনেকেই বিভ্রান্ত হতে পারেন। ঠাকুর নামটি শুনে মনে হতে পারে, তিনি কোনো অমুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু বাস্তবতা এর ঠিক বিপরীত। তিনি সুফি পরিবারের একজন উত্তরাধিকারী। তাঁর নামের প্রতিটি অক্ষর যেন এক গভীর বৃত্তান্ত বহন করে। সুফিবাদের মাধুর্য আর জীবনের প্রগাঢ় গভীরতা যেন তাঁর প্রতিটি কথায় প্রতিফলিত হয়।
তাঁকে নিয়ে লেখার ইচ্ছা আমার দীর্ঘদিনের। তাঁর সৃষ্টির জগৎ, তাঁর সংগ্রামের দিনগুলো, তাঁর অমলিন মানবিকতা—সবই আমার লেখায় তুলে ধরতে চাই। ইনশাআল্লাহ, তাঁর জীবনকে সাহিত্যিক রসে বর্ণিত করে পাঠকের সামনে তুলে ধরব। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেন এক একটি গল্প, আর সেই গল্প আমাকে ডাকছে একান্ত মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য।

তাঁর জীবন যেন একটি সুর, একটি কবিতা, একটি বহমান নদী। তাঁর গান লেখা বন্ধ হয়ে গেছে বটে, কিন্তু তাঁর ভেতরের শিল্পী কখনো থেমে নেই। তিনি এখনো গল্প বুনছেন, শব্দের মালা গাঁথছেন, আর মানুষের হৃদয়ে তাঁর চিহ্ন রেখে চলেছেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn