শুক্রবার - ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

মাইজভান্ডার শরীফে হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.)’র ১২তম ওরশ শরীফে লাখো ভক্তের ঢল

 

ত্বরীক্বায়ে মাইজভান্ডারীয়ার বৈশ্বিক রূপদানকারী, বিশ্ববরেণ্য সূফীসাধক শায়খুল ইসলাম হযরত গাউছুল ওয়ারা শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.)’র ১২তম ওরশ শরীফ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী মহা ইসলামী সুন্নি  সম্মেলনের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান, দেশ-জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে শনিবার (১৯ আগস্ট) শেষ হয়েছে।

 

ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরীফে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার উদ্যোগে ওরশ মাহফিল ও মহা ইসলামী সুন্নি  সমাবেশে  সভাপতিত্ব ও আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান ও মাইজভান্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন রাহ্বারে শরীয়ত ও ত্বরীক্বত হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভান্ডারী।

 

১৮ ও ১৯ আগস্ট শুক্র-শনিবার দুই দিনব্যাপী ওরশ শরীফে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা লাখো ভক্তের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বিশাল এলাকা।

 

ওরশ উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচিতে ছিল খতমে কুরআন, খতমে গাউছিয়া রওজায় গিলাফ চড়ানো, ভক্তদের ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, যৌতুক ও মাদকের বিরুদ্ধে গণ স্বাক্ষর, হুজুর কেবলার জীবনী আলোচনা।

 

সমাপনী দিবসে সভাপতির বক্তব্যে  শাহ্সূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, মাইজভান্ডারী সার্বজনীন প্রেমবাদী দর্শন শান্তি সম্প্রীতিরই দর্শন। মাইজভান্ডারী দর্শনে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও ধর্মীয় বাড়াবাড়ির কোনো সুযোগ নেই। তাই, আলেম ওলামাসহ দায়িত্বশীলদের বক্তৃতা বিবৃতি ও লেখনীতে সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেন, মাইজভান্ডার শরীফ এসে ভাগ্য অন্বেষী, মুক্তি প্রত্যাশী, দুঃখ-দুর্দশায় নিমজ্জিত মানুষ মাইজভান্ডারী মহাত্মাদের কাছে সবিনয় আর্তি-আরজি পেশ করেন। সবাই নিজ নিয়ত ও ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লাহর ওলীদের আধ্যাত্মিক করুণায় সিক্ত হন।

 

ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, এই দরবার শরীফের মহাত্মাগণ সব সময় শান্তি-সম্প্রীতি, সহঅবস্থান ও গণকল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছন।তাই দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সুশাসন রাজনৈতিক সহাবস্থান অত্যন্ত জরুরী। জনগণের প্রত্যাশা পুরণে দেশের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিংস আন্দোলনের পথ পরিহার করে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনে কাজ করতে হবে।

বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কেউ যদি অতি আগ্রহ দেখায় তাহলে বুঝতে হবে তার অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। যে কোন  সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। জনগণকে যেকোনো চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। যেন এই দেশ ইরাক, ইরান, সিরিয়া ও আফগানিস্তানের মতো না হয়।

 

তিনি আরোও  বলেন, আমরা চাই সংবিধানের আলোকে অবাদ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকটে ভুগছে। নিরপক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে ও রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলামী সুন্নী সন্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী মহসীন চৌধুরী। আন্জুমান কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আলমগীর খান, বিএসপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, অতিরিক্ত মহাসচিব মুফতি খাজা বাকি বিল্লাহ আল আজহারী, স্থায়ী পরিষদ সদস্য মো: সাইফুল ইসলাম, এটিএম সামশুল আলম বকুল, স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. জালাল উদ্দিন, মোঃ আসলাম হোসাইন, চট্টগ্রাম জেলা সাধারন সম্পাদক মো: জসিম উদ্দিন ভুইয়া, ফেনী জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবু তাহের, মুন্সিগঞ্জ জেলা সভাপতি এসএম বারী, গাজীপুর জেলা সাধারন সম্পাদক অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম,  মাওলানা আব্দুস ছাত্তার ছিদ্দিকী, মাওলানা বাকের আনছারী, মাওলানা এইচএম মাকসুদুর রহমান, মাওলানা হাফেজ নাজের হোসাইন প্রমুখ।

 

সালাত-ছালাম জিকির আজকার ও আখেরী মুনাজাতের পর তবরুক বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী ওরশ মাহফিল।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn