
ভোমরা স্থল বন্দর: ৮ মাসে ভারতে রপ্তানি হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার পন্য
ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে আট মাসে ভারতে রপ্তানি হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বাংলাদেশী পন্য। যা বিগত অর্থ বছরের তুলনায় ৩৩১ কোটি ২২ লাখ টাকা বেশি।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ভারতে যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টস বর্জ্য, তাঁতের শাড়ি, রাইস ব্র্যান অয়েল, মধু, ক্লিনিক ক্লথ, পাটের সুতা, পাটের চট, নারিকেল শলা, প্রাণের জুস, লিচু ড্রিংকস, প্রাণের চানাচুর ও চিপস।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাস (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ২ লাখ ১৩ হাজার ৬৯৮ টন বিভিন্ন ধরনের দেশীয় পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে। যার মূল্য ২ হাজার ৪৬৫ কোটি ৯ লাখ টাকা। একইভাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১ লাখ ৮০ হাজার ১৫৮ টন। যার মূল্য ছিল ২ হাজার ১৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সে হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এ বন্দরে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৩৩ হাজার ৫৪০ টন। আর আয় বেড়েছে ৩৩১ কোটি ২২ লাখ টাকা।
ভোমরা স্থলবন্দরের অন্যতম পণ্য আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স গনি অ্যান্ড সন্সের ব্যবস্থাপক অশোক কুমার জানান, তার প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস বর্জ্য, সুতার বর্জ্য ও রাইস ব্র্যান অয়েলসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে। ভারতের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা থাকায় রপ্তানি আয় কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
ভোমরা স্থলবন্দরের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাজ ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেন মন্টু জানান, আমদানির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারতে রপ্তানি করে তার প্রতিষ্ঠান। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রাণ গ্রুপের জুস, লিচু ড্রিংকস, চানাচুর ও চিপস। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তার প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি অন্তত ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু বলেন, ‘দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় ভোমরা অনেক সম্ভাবনাময়। এখান থেকে কলকাতার দূরত্ব কম হওয়ায় বড় ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন। তাছাড়া ভোমরার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা যথেষ্ট ভালো, নেই কোনো যানজট বা পণ্যজট। তবে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ দিলে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে ভোমরা স্থলবন্দর।’
ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা জানান, রপ্তানি বাড়লেও আমদানি কমেছে এ বন্দরে। তিনি বলেন, ‘বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা যদি সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে পারতেন তাহলে সরকারের যেমন রাজস্ব আয় বাড়ত, তেমনি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হতেন। কিন্তু এ বন্দরে সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতি থাকলেও বাস্তবে তা সম্ভব হচ্ছে না।’ অজ্ঞাত কারণে এখানে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে দেয়া হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
আয় বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত ডেপুটি কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, আমদানি ও রপ্তানি বাড়াতে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সেবা দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে অসাধু উপায়ে কোনো পণ্য যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সেদিকেও সর্বোচ্চ খেয়াল রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।