সোমবার - ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ভুয়া জমি রেজিষ্ট্রি দিতে গিয়ে প্রতারক আটক, মুচলেকায় ছাড়লেন ইউএনও

ভুয়া জমি রেজিষ্ট্রি দিতে গিয়ে প্রতারক আটক, মুচলেকায় ছাড়লেন ইউএনও

 

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ভুয়া জমি রেজিস্ট্রি দিতে গিয়ে একজন প্রতারক আটক হয়। আটক প্রতারক ও ওই চক্রের সদস্যদের আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে মুচলেকায় ছেড়ে দেন ইউএনও।
জমি রেজিষ্ট্রি দিতে গিয়ে একজন ভুয়া দাতাকে চিহ্নিত করেন গোদাগাড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব- রেজিস্ট্রার সাদেকুর রহমান। আটকের পর তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। পুলিশ আটক ব্যক্তিকে থানায় না নিয়ে গোদাগাড়ীর ইউএনও ফয়সাল আহমেদের নিকট নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ, ইউএনও ও দলিল লেখক রেজাউল চক্র বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দেয়। আটক ব্যক্তিকে মুচলেকায় ছেড়ে দেন ইউএনও।
১৬ মার্চ ( রবিবার) বিকেল ৪ টায় এমন ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, একজন প্রতারক অন্যের জমির দাতা সেজে রেজিস্ট্রি দিতে গিয়ে আটক হয়। সাব রেজিস্ট্রারের বিচক্ষণতায় প্রতারক চক্র ধরা পরে। এরপর আটক ভুয়া দাতাকে (মহিলা) পুলিশে দেওয়া হয়। আটকের পর তাকে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়ায় গোদাগাড়ীর সাধারণ মানুষের মাঝে চলছে আলোচনা সমালোচনা ঝড়। ভুয়াভাবে দাতা সেজে দলিল লেখকের সহায়তায় রেজিস্ট্রি দেওয়া এ চক্রের খপ্পরে পরে অনেক অসহায় পরিবার নিঃস্ব হয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা। দলিল লেখক রেজাউলের বিরুদ্ধে এর আগেও এমন ভুয়া দাতা সাজিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আছে।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত গোদাগাড়ী দলিল লেখক সমিতি রেজাউল ইসলাম বলেন, আমি বুঝতে পারিনি ওই ব্যক্তি ভুয়া জমি দাতা সাজিয়ে রেজিস্ট্রি দিতে এসেছেন। পরে সাব রেজিস্ট্রার বুঝতে পারলে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। আমি বাদি হয়ে মামলা করতেও রাজি ছিলাম। কিন্তু ইউএনও তাদের ক্ষমা করে একটি মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিএনপি’র নেতা জানায়, আ’লীগের দোসররা এখনো সক্রিয়। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানা ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। অপরাধীকে ছেড়ে সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল করে বিতর্ক সৃষ্টি করছে উপজেলা প্রশাসন। আমরা এসব ঘটনাসহ উপজেলা প্রশাসনের (ইউএনও) বিষয়ে তদন্ত চাই। আসলেই তিনি কোন রাজনৈতিক আদর্শে উজ্জীবীত।
এ বিষয়ে কথা বললে গোদাগাড়ীর সাব রেজিস্ট্রার সাদিকুল ইসলাম বলেন, আগে থেকেই ইনফরমেশন ছিলো বলে প্রতারক চক্রকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। আমি ওই প্রতারককে আটকের পর থানা পুলিশে দিয়েছি। পরে ইউএনও, এসিল্যান্ড, থানা পুলিশ মানবিক কারণে তাকে ছেড়ে দেয়। যদিও জমিটি অন্য কাউকে নয় তাঁর ছেলেদের দেওয়ার জন্য ওই মহিলাকে দাতা সাজিয়ে এনেছিলো। তাই প্রথম অপরাধ হিসেবে ক্ষমা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দিয়েও ফোনে পাওয়া যায়নি গোদাগাড়ী ইউএনও ও ওসিকে। পরে ম্যাসেজের মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা দিলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি। একারণে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ, নেইমুদ্দিন নামে ওই প্রতারক তার স্ত্রী’র নামে থাকা জমি হাতিয়ে নিতে অন্য আরেজন নারীকে স্ত্রী সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি দিতে যায়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn