বুধবার - ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি ভোট চায় না, ভোট পাবেও না : শেখ হাসিনা

স্মরণকালের বৃহত্তম তারুণ্যের জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) নির্বাচন ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ইলেকশন (নির্বাচন) তাদের কথা (লক্ষ্য) নয়, ওরা (বিএনপি) ভোট করতে আসে না, ভোট চায় না, ভোট পাবেও না। নির্বাচন নয়, তারা জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে আবারও ছিনিমিনি খেলতে চায়। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে আমরা চলি, আমার কোনো ভয় নেই। দেশের মানুষকে ভালোবাসি। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আর কেউ বাধা দিতে পারবে না। দেশের অগ্রযাত্রা যাতে কেউ নস্যাৎ করতে না পারে, সেজন্য ছাত্রলীগকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য, এ বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করব। কবির ভাষায়, ‘এই বিশ্বকে বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার।’ আমার কোনো ভয় নেই। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা কেউ যাতে নস্যাৎ করতে না পারে, তোমাদের (ছাত্রলীগ) অতন্দ্র প্রহরীর মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি তোমাদের বলব, শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি, ছাত্রলীগের মূলনীতি। এই নীতি মেনেই ছাত্রলীগকে চলতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এই বিশাল ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় বিশাল এই ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের ।
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে লাখ লাখ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত সামনে বাড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শপথ গ্রহণ করেন। শপথবাক্য পাঠ করান কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হলে লাখো শিক্ষার্থীদের গগনবিদারী স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সমাবেশের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। প্রথমে মাতৃভূমি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় ছাত্রলীগের থিম সং পরিবেশন করা হয়। ‘পিতার জন্য গান’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ছাত্রলীগের প্রকাশনা মাতৃভূমির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীকে দলীয় প্রতীক নৌকা সদৃশ স্মারক উপহার দেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
ছাত্র সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সারাদেশ থেকে রাজধানী ঢাকায় তারুণ্যের ঢল নামে। যে ঢলের শুরু আছে, যেন শেষ নেই। সকাল থেকেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বাদ্য-বাজনার তালে তালে নানা রং-বেরঙের গেঞ্জি, টুপি ও সংগঠনের পতাকা হাতে নিয়ে প্রবেশ করতে থাকে সমাবেশে। এরই মধ্যে দুপুরে শুরু হয় বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাকভেজা হয়ে ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে সমাবেশে আসেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে মূল মঞ্চে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের, গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদসহ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপবিষ্ট ছিলেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn