বৃহস্পতিবার - ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বালু দস্যুদের উৎপাতে ঝুঁকিতে হালদা

এশিয়ার বৃহত্তম মিঠা পানির মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১০-১২টি ড্রেজার দিয়ে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। আর সেই বালু নিতে হালদার বুকে নেমেছে অন্তত ২০টি বাল্কহেড। বাল্কহেডে করে এসব বালু রাউজান হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পাহাড়ের মতো স্তুপ আকারে রেখে বিক্রি হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে। একদিকে অবৈধভাবে বালু তোলায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অন্যদিকে অবৈধভাবে বালু তোলায় ও পরিবহনের কারণে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ ও উন্নয়ন অবকাঠামো। ঝুঁকির মুখে পড়েছে হালদার দুপাশের বাড়িঘরসহ আশপাশের কৃষি জমি। জানা গেছে, হালদার আশপাশে কোনো বালু মহাল বা বালু ইজারা না থাকলেও ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন করছে বেশ কয়েকটি চক্র। অবৈধ এ বালু ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও অবৈধভাবে এসব বালু উত্তোলনে একাধিক প্রভাবশালীসহ স্থানীয়রা জড়িত বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা অন্তত নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করছে। পরবর্তীতে এসব বালু এলাকাবাসীদের কাছে অথবা বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হালদার নব্যতা টিকিয়ে রাখতে কোনো ড্রেজার বা প্রতিষ্ঠানকে বালু কাটার অনুমতি দেয়া হয়নি। অথচ অনুমতি না নিয়েই বালু ব্যবসায়ী চক্র কর্তৃক প্রভাব বিস্তার করে হালদার বুকে এখন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব পালন করছে। এলাকাবাসী বলছেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অভিযান বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় হালদা থেকে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাহিরে। ড্রেজার ও বাল্কহেড শ্রমিকরা জানান, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তারা বালু উত্তোলন করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ড্রেজার শ্রমিক জানান, ঘনফুট দরে ব্যবসায়ীদের কাছে বালু বিক্রি করছেন তারা। আয়তন অনুযায়ী একেকটি বাল্কহেডে ৬ হাজার থেকে ৩০ হাজার ঘনফুট বালুর ধারণক্ষমতা রয়েছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা জাহাজ থেকে ৩টাকা ফুট হিসেবে ক্রয় করে অধিক লাভে বিক্রি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা প্রশ্ন রেখে বলেন, উপজেলা বা জেলা প্রশাসন থেকে হালদায় বালু উত্তোলনে কোনো বালুমহাল বা ইজারা না থাকলেও প্রতিদিন হালদার তলদেশের লাখ লাখ ফুট বালু লুটে নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, হালদা নদী থেকে কোনো বালু মহাল অথবা বালু ড্রেজিংয়ে কোনো ইজারা দেয়া হয়নি। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn