বাগমারার মাঠে মাঠে কৃষকরা ব্যস্ত আলু চাষে
রাজশাহীর বাগমারায় বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই আগাম আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। শুরু হয়েছে মাঠে মাঠে জমি চাষ, সার ছিটানো আইল বাঁধার কাজ। এবার খুরচা পর্যায়ে আলুর কেজি ৮০-৯০ টাকা ওঠে যাওয়ায় ব্যাপক হারে আলুচাষ শুরু করেছে এলাকার কৃষকরা। বাগমারার মাটি ও আবহাওয়া আলু চাষের জন্য বেশ উপযোগী। রোপণের ৬৫-৭০ দিনে আগাম জাতের এ আলুর ফলন হয় বিঘা প্রতি ৪৫-৫০ মণ। এদিকে আগাম জাতের আলু লাগানোর কারণে আশ্বিন ও কার্তিক মাসে এলাকায় কাজের অভাব দূর হয়েছে।
উপজেলা মাড়িয়া, গোয়ালকান্দি, যোগীপাড়া, বাসুপাড়া, গনিপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ উঁচু জমি সহ প্রায় সব ইউনিয়নে কমবেশি আলু চাষ করা হচ্ছে। আগাম আলু তুলে অধিক লাভের আশায় এবার জমির রস না শুকাতেই আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। আলু লাগানোর কারণে এলাকায় কৃষি কাজে নিয়োজিত শ্রমিকের চাহিদা ও মজুরী বেড়েছে। কৃষকরা বলছেন এবার এবার আলু লাগাতে তাদের গত বছরের তুলনায় খরচ অনেক বেশি হচ্ছে। গত বছর এক বিঘা জমিতে আলু রোপণ থেকে শুরু করে উত্তোলন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২০-২২ হাজার টাকা। এবার আলু বীজ, কীটনাশক, সার ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ৩০-৩২ হাজার টাকা প্রতি বিঘায় খরচ পড়বে বলে তারা ধারনা করছেন। মাড়িয়ার কৃষক লুৎফর রহমান জানান, আগাম জাতের আলুর দামটা ভালো পাওয়া যায়। ফলে প্রতি বছর এ আলুর আবাদ করছি। এবার আরো বাড়িয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করার কাজ শুরু করেছি। হামিরকুৎসার কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, আগাম জাতের আলু লাগানোর ৬৫-৭০ দিনে মধ্যে জমি থেকে আলু উত্তোলন করা যায়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিনি আরো জানান, এই এলাকায় আগাম জাতের আলু রোপণের কারণে আশ্বিন- কার্তিক মাসে কাজের অভাব দূর হয়েছে কৃষি শ্রমিকের। আগাম ধান কেটে আগাম আলু রোপণ শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। যার আলু যত আগে ওঠবে সে কৃৃষক তত বেশি লাভবান হবেন। যা উত্তোলন করে আগে ভাগে বাজারে নিতে পারলে ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে এই আলু।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে উঁচু জমি রয়েছে। কৃষকরা ধান কেটে সেখানে আগাম জাতের আলু রোপণ শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ভাল দাম পাওয়ার কারণে প্রতি বছর এই উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষের জমির পরিধি বাড়ছে। কৃষি কর্মকর্তার মতে প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না হলে আগাম জাতের আলু চাষ করে এবারও কৃষকরা লাভবান হবেন।