রবিবার - ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৬শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

বাগমারায় বিএনপি’র নেতার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের প্রসাশকের উপর হামলা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় আটক ১

বাগমারায় বিএনপি’র নেতার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের
প্রসাশকের উপর হামলা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় আটক ১

রাজশাহীর বাগমারায় সরকারী এক কর্মকর্তাকে বিএনপি’র বহিস্কৃত নেতা, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনি উপজেলার নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের প্রসাশকের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে। কর্মকর্তার গাড়ির হামলার ভিডিও ফুটেজ থাকলেও তা অস্বীকার করেছেন ওই কর্মকর্তাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৬ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ বহিস্কৃত বিএনপি’র নেতা ও ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর পরই বিএনপি ও জামায়াত পন্থী লোকদের রোষানলে পড়েন আ’লীগের নেতাকর্মীরা। নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও পানিয়া নরদাশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার আবুল। সে সময় থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। সরকারী নির্দেশ মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদের কাজ কর্ম পরিচালনার জন্য প্রসাশক নিয়োগের সিদ্বান্ত নেয়া হয়। ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার চেষ্টা করেন। তিনি ব্যর্থ হয়ে জেলা প্রসাশকের কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহনের একটি লিখিত কাগজ নিয়ে আসেন এবং চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য ইউপি সদস্যদের সাথে তার দূরত্ব সৃষ্টি হয়। পরে অন্যান্য ইউপি সদস্যরা সম্মিলিত ভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তিনি রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং প্রসাশক হিসেবে উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা তাজরুল ইসলাম মিলনকে দায়িত্ব দেন।
দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আইসিটি কর্মকর্তা তাজরুল ইসলাম নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের গেলে তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে ঘরে আটকে রাখে। ঘটনাটি নিয়ে ইউপি সদস্য আজাহার আলী প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের নির্দেশে তার লোকজন তাকে পিটিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে অন্যান্য ইউপি সদস্যরা তাদের লোকজন নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের উপস্থিত হয়। পরে রফিকুল ইসলামের লোকজনের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে ঘরে আটকে রাখে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম ও বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে আটক করে থানায় নেয়। এছাড়াও তিনি স্থানীয় লোকজনদের শান্ত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। নরদাশ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মাষ্টার মোশারফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি’র আহবায়ক ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়াকে দায়ী করেছেন। তার জন্যই নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদে এমন ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন। অবলিম্বে তিনি বিএনপি’র আহবায়ক ডিএম জিয়ার পদত্যাগ দাবী করেছেন। এছাড়াও তিনি বাগমারায় বিএনপি’র প্রুপিং এর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও দাবী করেছেন বিএনপি’র নেতা মোশারফ হোসেন।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা এড়িয়ে যান।
অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সেখানে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম নামের এক ইউপি সদসকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জনতার হাত থেকে বিএনপি’র ওই নেতাকে উদ্ধার করা হয়েছে। কেউ অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn