শনিবার - ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

বাগমারায় গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও এনজিও টাকা ফেরত পেতে জামানতকারীদের সংবাদ সম্মেলন

বাগমারায় গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও এনজিও টাকা ফেরত পেতে জামানতকারীদের সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহীর বাগমারায় গ্রাহকের জমানো প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বেসরকারী এনজিও সংস্থা আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ এর পরিচালক আক্কাছ আলী মাষ্টার ও তার দুই ছেলে। এমন ঘটনায় বেকায়দায় পড়েছে আমানতদানকারী ভুক্তভোগীরা।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভায়। ওই ঘটনায় রোববার ১৮ মে, বিকেল সাড়ে চারটায় বাগমারা প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে প্রতারিত ভুক্তভোগীরা এমন অভিযোগ করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। তারা অবিলম্বে প্রশাসন ও সরকারের  আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০১৬ সালে উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারে আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড স্থাপিত করেন গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তেলিপুকুর গাঙ্গোপাড়া গ্রামের মাষ্টার আক্কাছ আলী। তিনি ২০১৭-১৮ সালে উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয় জমা নেয়ার জন্য অনুমতি পান। সমবায় থেকে অনুমতি নেয়ার পর থেকে আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের নির্বাহী ও সভাপতির দায়িত্ব নেন মাষ্টার আক্কাছ আলী।

এছাড়াও তিনি তার ছেলে রায়হান আলী শেখকে উক্ত প্রতিষ্টানের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন।

অপরদিকে একই প্রতিষ্ঠানের ক্যাশিয়ার হিসেবে নিয়োগ দেন তার আপন ভাগিনা সোহরাব হোসেনকে। শুরু হয় প্রতারণার বিভিন্ন কলাকৌশল। এক পর্যায়ে তারা শতাধিক গ্রাহকের প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে উধাও হন আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বেকায়দায় পড়েন আমানত জমাদানকারী গ্রাহকেরা।

তারা নিরুপায় হয়ে সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

আমানতকারী দেউলিয়া গ্রামের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি অতিরিক্ত মুনাফার লোভ দেখিয়ে  গ্রাহকদের কাছ থেকে পাশ বই ও মানি রিসিভের মাধ্যমে তিন কোটি টাকার আমানত গ্রহন করেন। গ্রাহকের মুনাফার টাকা সময় মত পরিশোধ করে তাদেরকে আকৃষ্ট করেন।

এক সময়ে গ্রাহকদের টাকার প্রয়োজনের তাগিদে তাদের জমানো টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে বাঁধে বিপত্তি। তারা নানা ভাবে টালবাহনা শুরু করেন। গ্রাহকদের চাপে পড়লে এক পর্যায়ে আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ তাদের অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা লাপাত্তা হয়ে যান। অফিস বন্ধের কারনে গ্রাহকদের মধ্যে চরম হতাশা লক্ষ্য করা যায়। ওই ঘটনায় তারা টাকা ফেরৎ পাওয়া ও প্রতারক আক্কাছ আলী শেখ, ছেলে রায়হান আলী শেখ ও ভাগিনা সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন সাংবাদিক সম্মেলনে।

যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত আক্কাছ আলী শেখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাঠ পর্যায়ে আমরা টাকা উঠাতে পারছি না সেজন্য আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছি না। সাংবাদিক সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলার বাজেকোলা গ্রামের শাহাদৎ হোসেন, মতলেবুর রহমান, মিন্টু, মুনসুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, সেফাতুল্লাহ, মনিরুল ইসলাম, মোছাঃ জোসনা বেগম। উত্তরএকডালা গ্রামের আনোয়ার হোসেন, মোজাহার আলী, সোহেল রানা, ভবানীগঞ্জের মাহাবুর রহমান, হাসানপুরের  রফিক, মচমইলের জাকির হোসেন, পলাশীর রহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn