মঙ্গলবার - ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বাগমারায় উন্মুক্ত হয়েছে ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট, লাগানো হয়েছে গাছ

বাগমারায় উন্মুক্ত হয়েছে ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট, লাগানো হয়েছে গাছ

 

পুরো বাগমারা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট। প্রতিদিনই মানুষ কোন না কোন কাজে ভবানীগঞ্জ প্রবেশ করে। আর ভবানীগঞ্জ এসেই পড়েন বিড়ম্বনায়। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় উপজেলা বাগমারা। আর এই বাগমারা উপজেলা সদর অবস্থিত ভবানীগঞ্জে। একদিকে উপজেলা সদর অন্যদিকে ভবানীগঞ্জ পৌরসভা পাশাপাশি রয়েছে ভবানীগঞ্জ হাট। এই তিনের সংমিশ্রনে প্রতিদিন হাজারো মানুষের আগমন ঘটে উপজেলা সদরে।
উপজেলা সদরের প্রধান স্থান হিসেবেই পরিচিত ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট।

অনেক আগে থেকেই ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এটি হচ্ছে তিন রাস্তার মোড়। সে সাথে বাজারে প্রবেশের প্রধান রাস্তা। এই জিরো পয়েন্ট থেকেই উপজেলা সদর, কাঁচা বাজার, সেই সাথে গোডাউন মোড় হয়ে অন্য স্থানে চলে যাওয়া। সে কারণেই এই জিরো পয়েন্টে প্রতিনিয়তই মানুষের চলাচল বেশি হয়ে থাকে। পাশাপাশি অনেক ভারী যানবাহনে চলাচল করে এই জিরো পয়েন্ট দিয়ে।

জিরো পয়েন্টে আসলে মনে হয় কখন এখান থেকে বের হওয়া যায়। লেগেই থাকে যানজটের দীর্ঘ সারি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্থান হচ্ছে এই জিরো পয়েন্ট। অথচ জেলা সদর বা ঢাকার মত বড় বড় যানজটের সৃষ্টি হয় অনেক সময়। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বিব্রত হয়ে যায়। বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোন ব্যবস্থায় নেয়া হচ্ছিল না। বিশেষ করে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় জিরো পয়েন্টের গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি দখল হয়ে থাকে মৌসুমী ব্যবসায়ীর কাছে।

আর রাস্তার উপরে দোকানপাট বসিয়ে যানজটের সৃষ্টি করে। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ যারা হাটের ইজারাদার তাদেরকে টাকা দিয়েই সেখানে থাকতে হয়। গুটিকয়েক মৌসুমী ব্যবসায়ির কারণে প্রতিদিন যানজটে পড়তেন হাজার হাজার মানুষ। যানজটে নষ্ট হতো মানুষের গুরুত্বপূর্ণ সময়।

জিরো পয়েন্ট উন্মুক্ত করার চেষ্টা করলেও প্রতিবারই ব্যর্থ হয়ে ফিরতেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে এর আগেও বেশ কয়েকবার জিরো পয়েন্টকে ফাঁকা করা হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে জিরো পয়েন্টকে ফাঁকা করা হলেও আবারও সেখানে ব্যবসা শুরু করত তারা। ফলে আবারও শুরু হতো যানজট। বলতে গেলে মৌসুমী ব্যবসায়ী আর ইজারাদারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়তো প্রশাসনের কার্যক্রম।

অবশেষে গত বৃহস্পতিবার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করতে এসেছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ। সে উপলক্ষেই ভবানীগঞ্জ সদরের বিভিন্ন এলাকা পরিষ্কার করা হয়। অন্যদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জিরো পয়েন্টের ঐ সকল ব্যবসায়ীদের অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়। ফলে ফাঁকা হয়ে পড়ে জিরো পয়েন্ট।

জিরো পয়েন্টে কোন দোকানপাট না থাকায় এখন যানজট মুক্ত পরিবেশে দিব্যি চলাচল করছে উপজেলা সদরে আশা লোকজন। যানজটে কাউকে আটকে থাকতে হচ্ছে না দীর্ঘ সময়। এতদিন যা ছিল কল্পনাতীত। বর্তমানে জিরো পয়েন্টের ফাঁকা স্থানে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে শোভা বর্ধনকারী বিভিন্ন ফুলের গাছ রোপন করা হয়েছে। পাশাপাশি কেউ যেন জিরো পয়েন্টের আশপাশে দোকানপাট বসাতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা টাঙিয়ে দেয়া রয়েছে।

জিরো পয়েন্টের আশপাশের ব্যবসায়ীরা জানান, গুটিকয়েক মৌসুমী ব্যবসায়ির কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। এখন দোকানপাটও নেই, যানজটও নেই। জিরো পয়েন্টের দোকান উচ্ছেদ করায় প্রশাসনকে অনেকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন। আসলেই যেখানে মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করবে সেখানে সামান্য মুনাফার লোভে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের বসিয়ে ফায়দা হাসিল করে আসছিল কতিপয় লোকজন।

ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী লিটন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে জিরো পয়েন্টে বিভিন্ন প্রকার ফুলের চারা রোপন করা হয়েছে। কয়েকদিন থেকে আর কোন যানজট নেই। জিরো পয়েন্ট সহ গাছের চারা রক্ষায় নিরাপত্তা বেষ্টুনী দেয়া হবে। জিরো পয়েন্ট ফাঁকা রাখতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট উন্মুক্ত করতে প্রতিনিয়তই ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ অভিযোগ দিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভাতেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই জিরো পয়েন্ট। কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ীর কারণে প্রতিনিয়তই যানজট দেখা যেত এই স্থানে। সরকারি জায়গায় চাইলেই নিজের ইচ্ছামত যা কিছু তা করা যায় না। জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান হাওয়ায় ঐ সকল দোকানপাট সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। জিরো পয়েন্টে কেউ যেন আর ব্যবসা বসাতে না পারে সে বিষয়ে তৎপর রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn