বুধবার - ২৫শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ১১ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২৯শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া তায়কোয়ানডো সম্পর্ক চ্যালেঞ্জের মুখে: কুক্কিয়নের সঙ্গে টানাপোড়েন বাড়ছে

বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া তায়কোয়ানডো সম্পর্ক চ্যালেঞ্জের মুখে: কুক্কিয়নের সঙ্গে টানাপোড়েন বাড়ছে

 

বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় তায়কোয়ানডো প্রতিষ্ঠান কুক্কিয়ন-এর মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক এখন টানাপোড়েনপূর্ণ ও ক্রমেই কূটনৈতিকভাবে জটিল হয়ে উঠছে। কিছু শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, প্রমাণহীন অভিযোগ এবং সংবেদনশীল চিঠিপত্র বিনিময়ের মাধ্যমে গঠিত এই উত্তেজনা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের তায়কোয়ানডো উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম রানা ২৬শে মার্চ, ৫৫তম মহান স্বাধীনতা দিবসে, কোরিয়ার কুক্কিয়ন বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেন, যেখানে তিনি কোরিয়ান মাস্টার লী জুসাং-এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। চিঠিতে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তার সঙ্গে কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন বা যাচাইযোগ্য প্রমাণ সংযুক্ত ছিল না, বরং অভিযোগগুলো ছিল আগেই বিতর্কিতভাবে থানায় করা একটি জিডির সূত্র ধরে প্রণীত। কুক্কিয়নে প্রেরিত পত্র প্রস্তুতকারি হিসেবে রানাকে সহায়তা করেন এডহক কমিটির নির্বাহী সদস্য মোঃ মোসলেম মিয়া, নূরুদ্দিন হোসেইন,শাহ মোঃ মনজুরুল হক পাটোয়ারি উত্তম, বিকেএসপি প্রতিনিধি নূরুল ইসলাম এবং মোঃ পলাশ মিঞা, খন্দকার রেজা ও আবদুল্লাহ আল নোমান।
এরও আগে দেখা যায়, তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল, যিনি সরকারিভাবে ৭১ দিন আগে অব্যাহতি পেয়েছিলেন, তাঁর স্বাক্ষরে ও নির্বাহী কমিটির অনুমোদন ছাড়াই একটি চিঠি কুক্কিয়নে পাঠানো হয়, যা অনেকের কাছে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও নীতিভ্রষ্ট পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
কুক্কিয়ন হেডকোয়ার্টার এই ঘটনাগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে এবং বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তারা বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের ড্যান সার্টিফিকেট, অনুমোদিত কোচিং সহযোগিতা ও অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্ট আপাতত স্থগিত করেছে।
এছাড়াও, ঢাকাস্থ কোরিয়ান দূতাবাসে মাহমুদুল ইসলাম রানা অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘অবাঞ্ছিত’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন, এবং সম্প্রতি তিনি সেখানে প্রবেশ করতে গেলে অনুমতি পাননি বলে জানা যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন থেকে কুক্কিয়নে পত্র দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি।

বাংলাদেশের তায়কোয়ানডো সম্প্রদায়ের অনেকেই এখন উদ্বিগ্ন—কুক্কিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে যদি প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তবে এর খেসারত দিতে হতে পারে দেশের সম্ভাবনাময় তায়কোয়ানডো খেলোয়াড়, কোচ ও সংগঠকদের।
বর্তমানে দায়িত্বে থাকা এডহক কমিটির সামনে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ— কিভাবে দ্রুত আস্থা পুনরুদ্ধার করা যায় এবং আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের অবস্থান পুনরায় সুসংহত করা যায়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের মতো এক তাৎপর্যপূর্ণ দিনে এমন একটি শিষ্টাচার বহির্ভূত চিঠি আন্তর্জাতিকভাবে পাঠানো—তাৎপর্যময় ও উদ্বেগজনক।
কূটনৈতিক সম্পর্ক, ক্রীড়াঙ্গনের সম্মান এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি—সবকিছু এখন সুস্থ ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করছে।
প্রশ্ন একটাই: এডহক কমিটি কি পারবে এই সংকট সামাল দিতে? সময়ই দিবে তার উত্তর।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn