শনিবার - ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৯ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

‘বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনির তথ্য দিলে পুরস্কার দেবে সরকার’

 বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক পাঁচ আসামির তথ্য দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য দেওয়া ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সোমবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরাম।

সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী সাতজনের মধ্যে সরকার দুজনের তথ্য পেয়েছে। বাকি পাঁচজন এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

যদি কোনো নাগরিক ওই পাঁচজনের তথ্য দিতে পারেন, তবে তাকে পুরস্কৃত করবে সরকার। যে দুজনের তথ্য পেয়েছি, তাদের মধ্যে একজন আমেরিকায় থাকে রাশেদ চৌধুরী। আরেকজন থাকে কানাডায়। তাদের জন্য আমরা অনেক চিঠিপত্র লিখেছি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েও আমরা আমেরিকার প্রেসিডেন্টকেও চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা সব সময় বলে, এই ইস্যুটা তাদের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে আছে। দুই বছর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে আমাদের বলেছে, বাংলাদেশের যে কেসটা হয়েছিল, সেই মামলার তথ্য দিতে। আমরা সেই সব তথ্য তাদের দিয়েছি।

ড. মোমেন আরও বলেন, কানাডায় যে আসামি পলাতক আছে, তার বিষয়ে কানাডা সরকার কোনো তথ্য দিচ্ছে না। এ বিষয়ে আমরা কানাডায় একটা মামলাও করেছি। কানাডার আদালত বলেছে, সে যেখানে আছে বা অবস্থান করছে সে বিষয়ে তথ্য দিতে কোনো বাধা নেই। আদালতের নির্দেশ থাকার পরও কানাডা সরকার সে তথ্য আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। কানাডার সরকার বারবার অজুহাত দেখায়। এই দুজন সম্পর্কে আমরা জানি। আর বাকি পাঁচজন সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ’৭৫-এর পরের সরকার সব আসামিকে বিভিন্ন দেশে নিয়োগ দিয়ে পাঠায়। তারা যখন বুঝতে পারে যে, তাদের বিরুদ্ধে দেশে কোনো এক সময় মামলা হবে, তারপর তারা ভিন্ন নামে আত্মগোপনে চলে যায়। আমি দেশবাসীকে বলতে চাই, আপনারা কেউ যদি এই পাঁচজনের তথ্য দিতে পারেন, তাহলে আপনাদের সরকার পুরস্কৃত করবে।

তিনি আরও বলেন, কানাডা আমেরিকার মতো দেশ যেখানে আইন অত্যন্ত শক্তিশালী, যারা আইনের দেশ তারা কখনো খুনিদের আশ্রয় দিতে পারে না। তারা এমন সব খুনিতে আশ্রয় দিয়েছে, যারা একটা দেশের রাষ্ট্রপতি এবং তার সমস্ত পরিবারকে হত্যা করেছে। দুনিয়ার অনেক দেশেই অভ্যুত্থান হয়, সেখানে হয়তো বা রাষ্ট্রপতিকেই শুধু হত্যা করে। কিন্তু আমাদের দেশের অভ্যুত্থানে শুধু রাষ্ট্রপতি নয়, তার পুরো বংশকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার প্রবাসী ভাইদের বলব, আপনারা এই দুই চিহ্নিত খুনিদের বাসার সামনে সাপ্তাহে অন্তত একবার হলেও যাবেন। তাদের ভর্ৎসনা ও নিন্দা জানাবেন। যাতে করে তারা মনপীড়ায় ভোগে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন, সাংবাদিক নেতা মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn