রবিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ফিতরা টাকা দেয়ার কথা বলে চুনারুঘাটে রানিগাঁও দাখিল মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষন করে লম্পট গোপলকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করেনি

ফিতরা টাকা দেয়ার কথা বলে চুনারুঘাটে রানিগাঁও দাখিল মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষন করে লম্পট গোপলকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করেনি

 

হবিগঞ্জে চুনারুঘাট উপজেলার রানিগাঁও দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণী ছাত্রী (১৩)কে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফিতরা টাকা দেয়ার কথা বলে ধর্ষন করেছে । এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ঘরের পরিবার ও এলাকার প্রভাবশালী মুরুব্বি মহল। মাগুরা আছিয়া ধর্ষনের মতো চুনারুঘাটে এমন একটি ঘটনা নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে । ধর্ষনের ফলে ওই কিশোরী অবস্থা আশঙ্কা জনক হয়ে পড়েছে । এরপরও লম্পট আব্দুল গাফফার ওরফে গোপাল কে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি থানা পুলিশ । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদ্রাসা ছাত্রী কিশোরী পিতা উপজেলার রানিগাঁও ইউনিয়নে ৮ নং ওয়ার্ডে পারকুল উত্তর বস্তি গ্রামে বাসিন্দা হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের দিন মজুরি মোঃ দুলা মিয়া বাদী হয়ে গত শুক্রবার ( ২৮ মার্চ) চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন । মামলা বিবরণে জানা যায় , বাদীর কিশোরী একমাত্র কন্যা রানিগাঁও দাখিল মাদ্রাসার মেধাবী ষষ্ঠ শ্রেণী ছাত্রী । কিশোরী মাতা সহজ-সরল রাফিয়া খাতুন অভাবের তাড়নায় প্রতিদিন এলাকায় অনেক বাড়িতে ” ঝি ” এর কাজ করে খুব কষ্টে সংসার চালায়। নেই কোনো তাদের অর্থসম্পদ । একই গ্রামের পাশাপাশি প্রায় ৩ শ গজ পূর্বে মৃত আব্দুল মনাফ এর আব্দুল গফফার ওরফে গোপাল (৫৭) ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চাউল বা ফিতরা টাকা দিবে বলে গত সোমবার (২৪ মার্চ) বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪ টা দিকে ডেকে নিয়ে যায় গোপন মিয়া বাড়িতে এবং ঘরের ভেতর ঢুকিয়ে ঘরের ভেতর দরজা – জানালা বন্ধ করে মাদ্রাসা ছাত্রী কিশোরীকে মুখে চাপ নিশ্বাস বন্ধ করে ধর্ষন করে । ধর্ষন করার সময় ঘরের ভেতর কেউ ছিল না। ধর্ষন করার সময় কিশোরী চিৎকার দিলে গোপালের পুত্রবধু রোজিনা আক্তার এসে দরজা খুলে দেখে ফেলার সাথে সাথে রান্না ঘরের পেছন দিয়ে বের করে দেয় চুরির ভয় দেখিয়ে । এক পর্যায়ে ওই কিশোরী বিষয়টি লজ্জায় কারও কাছে না বলে তাঁর পিতা-মাতাকে নিরবে জানায়। এর পর হতদরিদ্র অসহায় পিতা মোঃ দুলা মিয়া বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় গিয়ে ধর্ষনকারী আব্দুল গফফার ওরফে গোপাল বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় । এ ঘটনা নিয়ে গ্রাম জুড়ে সমালোচনা শুরু হয় । জানাযায় , লম্পট গোপাল প্রচুর অর্থসম্পদ হওয়ায় তাঁর আত্মীয় স্বজন ও প্রভাবশালী মুরব্বিদের সাথে আঁতাত করে চলে । কেউ বিষয়টি জানতে গেলে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লোক জন সহ পরিবারের লোকরা বিভিন্ন ভাবে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে । সূত্রে জানা যায় , রানিগাঁও ইউনিয়নের প্রভাবশালী ও আ’লীগের নেতা সাবেক মেম্বার দীর্ঘ দিন ধরে থানার কথিত সোর্স আছকির মিয়া উভয়পক্ষ বিষয়টি যেনে রফাদফা চেষ্টা চালানো হচ্ছে । থানার সোর্স সাবেক মেম্বার আছকির মিয়া বাড়িতে ওই কিশোরী ও ধর্ষনকারী গোপাল এর লোকজনকে দুই দিন ধরে ডেকে নিয়ে নিরবে মামলা শেষ করার চেষ্টা চালায়। সাবেক মেম্বার আছকির মিয়া সহ গ্রামের মাতব্বররা বিভিন্ন ধামাচাপা দিয়ে তাদের কথা মতো কিছু টাকার বিনিময়ে কিশোরীর পিতা দুলা মিয়া মামলা তুলে নেওয়ার জন্য রাজি করার চেষ্টা চালায় । বাদী দুলা মিয়া রাজি না হয়ে বের হয়ে আসে । বাদী দুলা মিয়াকে বলে তোমাকে যে টাকা দেওয়া হবে তারচেয়ে থানা পুলিশ , র ্যাব কে টাকা দিলে মামলা বিভিন্ন দিকে যাবে । গোপলের সাথে কিছু করতে পারবে না আইলের দিকে । সংবাদিকদের দিয়ে পএিকা নিউজ করে কোনো ফায়দা আসবে না । টাকা পয়সা থাকলে আইনে দিকে কথা বলে । ওই কিশোরী মাদ্রাসা ছাত্রীর অবস্থা অবনতি হলে , তার পিতা তাঁকে গত বুধবার (২৬ মার্চ) চুনারুঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু সেখানে ও চলে গড়িমসি । অবশেষে এক পর্যায়ে থানা পুলিশ মামলা রজু করে ধর্ষনকারী রানিগাঁও দাখিল মাদ্রাসা ছাত্রীকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ডাক্তারের টেস্ট রিপোর্ট পাওয়ার পর থানায় রেখে দেয় । অথচ হতদরিদ্র অসহায় দিন মজুরী দুলা মিয়া অভাব অনটনের কারণে মেয়েকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কোনো কিছু ক্রয় করে দিতে পারেনি। এমনকি তাঁর সংসারে ঈদের খুশি করতে পারে নি । এদিকে দুলা মিয়া থানায় মামলা করার কারণে প্রকাশ্যে ধর্ষক আব্দুল গাফফার ওরফে গোপাল ও তাঁর কিছু নিজস্ব অর্থশালী মাতব্বর ফরিদ মিয়া তালুকদার , মরতুজ আলী , থানা সোর্স সাবেক মেম্বার আছকির মিয়া সহ আরো অনেক লোকজনরা থানা থেকে মামলা না তুলা হলে বাদী দুলা মিয়া সহ পরিবারের লাককে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি সহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে । এমনকি মামলার বাদী ও পরিবারের লোকজনকে ভিটে বাড়ি উচ্ছেদ করার পায়তারা করছে । বাদীর অর্থহীন হওয়ায় মামলা এফেয়ার করছে না আদালতে এবং আসামীকে এখনো গ্রেফতার করেছে না পুলিশ । এ রকম ঘটনায় আসামী গ্রেফতার না করায় ঐতিহ্যবাহী রানিগাঁও দাখিল মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট করে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে । মাদ্রাসা ছাত্রীরা যে কোনো সময় কঠিন কর্মসূচি দিবে বলে জানা গেছে । থানার সাব ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কর্মকর্তা এস আই মৃদুল কুমার ভৌতিক জানান , আসামী আব্দুল গাফফার ওরফে গোপালকে ফেলে ধরা হবে বাদীকে শান্তনা দিয়ে দিনের পর দিন যাচ্ছে । আসামী দুর্গম এলাকা হওয়ায় পুলিশ ধরছে না আসামীকে কিন্তু আসামী রাতে বাড়িতে ঘুমায় । বাদী বলেন , আমরা গরীব হওয়ায় কেউ আমরা ন্যায় বিচার পাইনা। আমার কিশোরী মেয়ে খাওয়া ধাওয়া ছেড়ে এবং অসুস্থ হয়ে ঘরে রয়েছে এবং মাদ্রাসা যাওয়া দুরের কথা লজ্জায় আমার কন্যা বের হচ্ছে না । আমি কার কাছে গিয়ে ন্যায় বিচার পাবো। সেনাবাহিনী যদি আমার মেয়ের ইজ্জত সম্মান ও ভবিষ্যৎ দেখে মামলার বিষয়টি আমলে নিলে অনেক উপকার হবে । এ বিষয়ে উপজেলার রানিগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রিপন , ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মেম্বার , সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার মোছাঃ হাসনা আক্তারকে এঘটনা বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা জানান , ঘটনাটি শুনেছি কিন্তু ঘটনাটি ন্যাক্কার জনক । আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু বাদীর পক্ষে সহায়তা করার ওই পরিবারকে করবো। মামলার বিষয়টি সত্য ঘটনাটি উদঘাটন করে বের করে এনে দোষী ব্যক্তির শাস্তি হউক এলাকার সচেতন মহল মনে করেন ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn