রবিবার - ১৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ - ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - ২০শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

প্রেমের আশ্বাসে সুখের আশায সংসার ভাঙলো ফিরোজা, দ্বিতীয়বারও মিললো না সুখ

প্রেমের আশ্বাসে সুখের আশায সংসার ভাঙলো ফিরোজা, দ্বিতীয়বারও মিললো না সুখ

 

প্রেমের আশ্বাসে প্রথম সংসার ত্যাগ করেছিলেন ফিরোজা বেগম। দ্বিতীয়বার নতুন করে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রবাসী প্রেমিক মোর্শেদ আলমের সঙ্গে। কিন্তু নির্মম বাস্তবতায় দ্বিতীয় সংসারটিও বেশি দিন টেকেনি। কষ্টার্জিত অর্থ, ভালোবাসা আর বিশ্বাস দিয়ে গড়ে তোলা সেই সম্পর্ক আজ অতীত!
মোর্শেদের দেওয়া তালাকপত্রে শেষ হওয়ার পথে তাদের দাম্পত্যজীবন।

ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের কালিউতা গ্রামে।

সরেজমিনে কালিউতা গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, ফিরোজা ও মোর্শেদের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মোর্শেদ বেকার হওয়ায় ফিরোজার পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। পরে পরিবারের পছন্দে ফিরোজার অন্যত্র বিয়ে হয়। তবুও গোপনে চলতে থাকে তাদের সম্পর্ক। একপর্যায়ে মোর্শেদের প্রেমের প্রলোভনে পড়ে ফিরোজা তার প্রথম স্বামীকে তালাক দেন। এরপর দুজনেই পাড়ি জমান বিদেশে ফিরোজা সৌদি আরবে ও মোর্শেদ মালদ্বীপ।

প্রবাসজীবনের কষ্টার্জিত অর্থে দেশে ফিরে ফিরোজা বাড়ি নির্মাণ করেন, যদিও জমি ও অন্যান্য সম্পত্তি রাখা হয় মোর্শেদের নামে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তিন বছর হলো তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিছুদিন শান্তিপূর্ণভাবে চললেও বাবার বাড়ির সাথে স্বামীর বাড়ির একটি পুরনো জমি-সংক্রান্ত মামলা নিয়ে দাম্পত্যকলহ শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, এ নিয়ে মোর্শেদ ফিরোজাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন এবং একপর্যায়ে তালাক পাঠিয়ে দেন।

ফিরোজা বেগম বলেন, “প্রথম স্বামীর কাবিনের টাকা দিয়ে মোর্শেদকে বিদেশ পাঠাই। মায়ের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা এনে ঘর ও আসবাব কিনি। সবই করেছি ওর জন্য। অথচ আজ সে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।”

বর্তমানে পরিবার ও সমাজ থেকে অবহেলিত হয়ে দুঃসহ এক জীবন পার করছেন তিনি। তবুও মোর্শেদের প্রতি ভালোবাসা হারাননি ফিরোজা। বলেন, “আমি এখনও ওকে ভালোবাসি। ওর সংসারে ফিরতে চাই।”

এই ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের মতে, প্রেমের টানে প্রথম সংসার ভাঙলেও দ্বিতীয় সংসার থেকেও সম্মান ও নিরাপত্তা পাননি ফিরোজা। বরং সর্বস্ব হারিয়ে আজ তিনি নিঃস্ব।

এই ঘটনা নারীর সামাজিক অবস্থান, সম্পর্কের দায়িত্ববোধ এবং প্রবাসজীবনের বাস্তবতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। প্রেম, বিয়ে ও সম্পত্তি বিষয়ে নারীদের অধিক সচেতনতা, আত্মনির্ভরতা এবং আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি পরিবার ও সমাজকেও হতে হবে দায়িত্বশীল ও সহানুভূতিশীল।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn