সোমবার - ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৯ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, প্রতিবাদ চবির ৪৫ অধ্যাপকের

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিদাতা রাজশাহীর পুঠিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ (হলুদ দল)।

আজ ২৩ মে (মঙ্গলবার) এক বিবৃতিতে ৪৫ জন অধ্যাপকের স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে এই প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ মে প্রকাশ্য এক জনসভায় বিএনপি নেতা আবু সাঈদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানোর যে হুমকি দিয়েছেন তা এক ধরনের মধ্যযুগীয় বর্বরতা ও সন্ত্রাসবাদ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই প্রগতিশীলতার পক্ষে এবং সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার এই বর্বরোচিত হুমকির তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করছেন চবির প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ তথা হলুদ দলের ৪৫ জন অধ্যাপক।

তাঁরা হলেন – অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ মামুন, অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক, অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, অধ্যাপক ড. আবুল মনছুর, অধ্যাপক মোঃ রুহুল আমিন, অধ্যাপক ড. আনোয়ার সাঈদ, অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন, অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ, অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো: আফতাব উদ্দিন, অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান, অধ্যাপক ড. দানেশ মিয়া, অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার ইসলাম, অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান, অধ্যাপক ড. অলক পাল, অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম, অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ, অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহা, অধ্যাপক ড. রকিবা নবী, অধ্যাপক ড. জ্ঞান রত্ন, অধ্যাপক ড. এনায়েত হোসেন, অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সেলিমুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. দেবাশীষ পালিত, অধ্যাপক ড. উদিতি দাস, অধ্যাপক ড. মহীউদ্দিন, অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র মজুমদার, অধ্যাপক ড. এস এম রফিকুল আলম, অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ সহিদ উল্যাহ, অধ্যাপক ড. ইন্দ্রজিৎ কুন্ডু, অধ্যাপক ড. অনুপম দাস গুপ্ত, অধ্যাপক ড. ফারাহ জাহান, অধ্যাপক ড. দ্বৈপায়ন সিকদার, অধ্যাপক ড. এ কে এম রেজাউর রহমান, অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, অধ্যাপক ড. সাইদুল ইসলাম সোহেল, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জালাল আহাম্মদ, অধ্যাপক ড. শারমিন সুলতানা, অধ্যাপক ড. সুপ্তিকনা মজুমদার, অধ্যাপক ড. ফয়সাল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোস্তফা আলী, অধ্যাপক মোহাম্মদ ফয়সাল এবং অধ্যাপক ড. ফারাহ জাহান।

বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে প্রকাশ্যে কোন ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাকে হত্যার হুমকি একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যা সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য, রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রী, অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপকার এবং আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের বিশ্ব স্বীকৃত রাষ্ট্রনায়ক।

প্রকাশ্যে রাজনৈতিক সমাবেশে তাঁকে হত্যার হুমকি মানে গণতন্ত্রকে হত্যার হুমকি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়ার হুমকি, বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনকে থামিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য সৃষ্টির হুমকি।

জীবিত কোন ব্যক্তিকে কবরস্থানে পাঠানোর হুমকি আমাদেরকে মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বাংলাদেশ আফগানিস্তান নয়! তালেবানী কায়দায় আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্য সমাজে মধ্যযুগীয় বর্বরতা ফিরিয়ে আনার এই অপচেষ্টা কোনভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বাংলাদেশের সচেতন সমাজ মেনে নিতে পারে না।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করার যে অপচেষ্টা তা একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াপনা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উসকে দেয়ার নীল নকশা।বিএনপি’র মত একটি রাজনৈতিক দলের কাছে জাতি কখনোই এটা আশা করতে পারেনা।

আমরা আশা করি বিএনপি এই ধরনের নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিহার করে গণতান্ত্রিক পথে চলবে এবং ইতিবাচক রাজনীতি করবে। গঠনমূলক সমালোচনা ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে হাঁটবে এবং জাতি গঠনে শক্তিশালী ভুমিকা পালন করবে। আমরা আরও আশা করব বিএনপি’র পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে এই হত্যার হুমকির জন্য জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা চাইবে এবং উক্ত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করবে।

আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাবো অতি দ্রুত এই সন্ত্রাসী বক্তব্য দেয়া বিএনপি নেতাকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির বিধান করবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn