
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানঃ আনারকলি জেবুন নাহার হোসেন
দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিবেদিত প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ বজায় রক্ষায় আপেষহীন সংগ্রামী মহিয়সী নারী আনারকলি জেবুন নাহার হোসেন, বরিশাল শহরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৫৫ সালে মেট্রিকুলেশন পাশের পর চিকিৎসক স্বামীর উচ্চ শিক্ষার্থে পারি জমান বিলাতে । দেশে ফিরে সন্তান, সংসার সামলিয়েও পড়াশুনা এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অতি আগ্রহী মহীয়সী আনারকলি ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করেন । সার্জারী বিশেষজ্ঞ স্বামীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সার্জারী বিভাগে বিভাগীয় প্রধানের পদে পদায়ন করায় ঢাকা শহরে শুরু করেন আরেক সংগ্রামী জীবন । চিকিৎসক স্বামীকে সপ্তাহে একদিন বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানে করেন সর্বাত্মক সহযোগীতা । যেকোন মেধাবী গরীব শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা সুসম্পন্ন করতে শিক্ষার্থীদের বিত্তশালী আত্মীয় এবং পরিচিতগণের বাসায় করেন লজিং থাকার ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষগণকে মেধাবী গরীব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, হোস্টেলে থাকার সুব্যবস্থা করার আকুল আবেদন করতেও তিনি এক বিন্দু দ্বিধা করেননি । শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা মনিটরিং করতে ছুটে যেতেন লজিং বাড়িতে কিংবা হোস্টেলে । দেশে বিদেশে অসংখ্য সেইসব শিক্ষার্থীগণ আজ উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন ।
কত অসহায় পিতার বিবাহযোগ্য কন্যাদের হাজারো বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নিজ অর্থব্যায়ে তিনি শিক্ষিত, যোগ্য, সুপাত্রে পাত্রস্থ করেছেন সেই হিসাবও অগণিত । যেকোন গরীব দুঃখীর কষ্টে অস্থির হয়ে পরেন সাহায্যার্থে ।
জনগণকে প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণকারী ও ভয়ঙ্কর এটম বোমা – প্লাস্টিক পণ্য এবং পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে দিনরাত একাকী সংগ্রাম করছেন এই সংগ্রামী লড়াকু নারী । জনগণের কটুক্তি, উপহাস, শত বাধা বিপত্তি কিছুই তাকে দমিয়ে রাখতে পারে নি । গুলশান লেকের ধারে বছরের পর বছর ধরে একাকী চালিয়ে যাচ্ছেন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী । ভেষজ ঔষধ ব্যবহারে সর্বদা উৎসাহিত করে চলেছেন জনগণকে ।
সুদীর্ঘকাল থেকে মনে মনে চেয়েছিলেন একটি সংগঠন করবেন । তাঁর মত মন ও মানসিকতার সঙ্গীগণ তাঁর এই দেশ সেবা ও জনকল্যাণমুলক কর্মসূচী এগিয়ে নিয়ে যাবে । সুদীর্ঘকাল অপেক্ষার পর করোনাকালীন সময়ে তিনি সেই সঙ্গীদের খুজে পান । জীবন সায়াহ্নে শক্তি ফিরে পান, নতুন উদ্যমে দেশ ও জনগণের কল্যাণে সকল উন্নয়নমূলক কাজে ঝাপীয়ে পরতে ।
১৮ আগস্ট ২০২২ সালে সম মানসিকতার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে নারীদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেন দেশ ও সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান “আন নিসা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন” ।